বাড়ির ছাদেই হবে ঢ্যাঁড়শের ভালো ফলনবাড়ির ছাদেই হবে ঢ্যাঁড়শের ভালো ফলন

নিউজ ডেস্কঃ

ঢ্যাঁড়শ বা ভিন্ডি, মালভেসি পরিবারের অন্তর্গত উদ্ভিদ যা সবজি হিসাবে খাওয়া হয়। এর বৈজ্ঞানিক নাম Abelmoschus esculentus. এটি Lady’s Fingers, Okra, ভিন্ডি, গাম্বো , বান্টু, এমনই বিভিন্ন নামে পরিচিত৷ ঢ্যাঁড়শ ফলটি প্রায় ১৮ সেমি পর্যন্ত লম্বা হয়৷ সবুজ রঙের লম্বা ঢ্যাঁড়শের মধ্যে অসংখ্য হলদেটে সাদা নরম বীজ থাকে৷

ঢ্যাঁড়শ নানা ভাবে খাওয়া হয়৷ ভর্তা, ভাজি, তরকারিতে মূলত সবজি হিসেবেই এটি ব্যবহৃত হয়৷ এটি পুষ্টিগুনে সমৃদ্ধ, সহজলভ্য, তাই এর চাহিদাও অনেক৷ এতে ভিটামিন ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে বিভিন্ন রকমের খনিজ পদার্থ, যেমন- ক্যালশিয়াম, লোহা, আয়োডিন প্রভৃতি। রয়েছে থায়ামিন, রিবোফ্লাভিন, ক্যারোটিন, ফলিক এসিড, নিয়াসিন, অক্সালিক এবং অ্যামাইনো অ্যাসিড-ও৷

ঢ্যাঁড়শের মধ্যে থাকা বিভিন্ন উপাদান আমাদের শরীরে হাড়ের গঠন মজবুত করে এবং তা ক্ষয় হওয়া থেকে রক্ষা করে। ঢ্যাঁড়শের ফাইবার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে সাহায্য করে এবং রক্তের শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখে। হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি হ্রাস করে। দেহে লোহিত রক্ত কণিকা উৎপাদনে সাহায্য করে৷ এছাড়া, দেহের খারাপ কোলেস্টরল কমাতেও এর অবদান উল্লেখযোগ্য৷ বাড়িতেই (Home Farming) কিন্তু এই ঢ্যাঁড়শ চাষ সম্ভব৷ ছাদে টবে সহজেই ফলাতে পারেন ঢ্যাঁড়শ৷

মূলত শুষ্ক-আর্দ্র আবহাওয়ায় ঢ্যাঁড়শ চাষ ভালো হয়৷ তবে এখন সারা বছরই মোটামুটি এটি চাষ করা যায়৷ শীতের শেষ থেকে বৈশাখ মাস পর্যন্ত চাষ করলে ভালো ফলন পাওয়া যায়৷ মাটির টব, হাফ ড্রাম বা পলিথিনের ব্যাগ, সবেতেই এর চাষ সম্ভব৷ ভালো ফলনের জন্য ১০-১২ ইঞ্চির টব নেওয়া যেতে পারে৷ মাটি দোআঁশ বা বেলে দোআঁশ হলে ভালো হয়৷ এবং তা ঝুরঝুরে হতে হবে৷

বেলে-দোআঁশ মাটির সঙ্গে জৈব সার মিশিয়ে এটিকে ঝুরঝুরে করে নিয়ে টবে দিতে হবে৷ টবের নীচে একটি ছিদ্র থাকা আবশ্যক যাতে অতিরিক্ত পানি এখান দিয়ে নির্গত হয়ে যায়৷ ঢ্যাঁড়শ গাছ বেশি পানি সহ্য করতে পারে না৷ তাই মাটিতে কোনওভাবেই যাতে পানি না জমে সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে৷ ঢ্যাঁড়শ বীজ রোপনের আগে এই বীজকে ২৪ ঘন্টা পানি ভিজিয়ে রাখতে হবে। তারপর প্রতিটি টবে প্রতিটিতে ৩-৪ টি করে বীজ বপন করতে হবে। কিছুদিন পরে চারা বেরিয়ে আসবে৷

চারা গাছ একটু বড় হলে তার গোড়া থেকে একটু দূরে হাফ চা চামচ ইউরিয়া এবং পটাশ সার দেওয়া যেতে পারে৷ গাছের চারপাশে যেন আগাছা না জন্মায় তাও লক্ষ্য রাখতে হবে৷ আগাছা হলে তা সাবধানে গাছের ক্ষতি না হয় এমনভাবে তুলে ফেলতে হবে৷ প্রয়োজন মতো পানি দিতে হবে ঢ্যাঁড়শ গাছে৷ বীজ বপনের প্রায় দুমাস পরে ঢ্যাঁড়শ সংগ্রহ করা যায়৷ কচি ঢ্যাঁড়শের স্বাদ ভালো৷ বেশি বড় হয়ে গেলে তার স্বাদ কমতে থাকে৷

ঢ্যাঁড়শ গাছে মোজাইক রোগের প্রকোপ সবথেকে বেশি দেখা যায়৷ এই রোগে গাছের পাতা হলুদ হয়ে কুঁকড়ে যায়৷ এই অবস্থায় আক্রান্ত গাছকে দ্রুত সেখানে থেকে তুলে এনে পুড়িয়ে ফেলতে হবে তা না হলে অন্যান্য গাছেও তা ছড়িয়ে পড়তে পারে৷
বর্ষা চ্যাটার্জি
সুত্রঃ কৃষি জাগরন

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *