চলছে মধু মাস জ্যৈষ্ঠ। আম ও লিচুসহ অন্যান্য ফলের ভরা মৌসুম। রয়েছে স্বাদে অনন্য দেশসেরা রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার আম। আর এ অঞ্চলে এখন চলছে দিনভর রোদ আর বৃষ্টির লুকোচুরি। পাশাপাশি যুক্ত হয়েছে গরম। জ্যৈষ্ঠের বৈচিত্রময় এ দিনে জমে উঠতে শুরু করেছে রাজশাহীর আমের বাজার ও আড়তগুলো।

১৫ মে থেকে সকল প্রকার গুটিজাতের এবং ২০ মে থেকে গোপালভোগ আম পাড়া শুরু হয়েছে। রাজশাহীর সবচেয়ে বড় আমের মোকাম পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর হাট। এ হাটের আশপাশের সড়কগুলোর যেদিকে চোখ যাবে চোখে পড়বে আম ভর্তি ভ্যান। বাগানের কাঁচা-পাকা আম নিয়ে সব ভ্যানের গন্তব্য বানেশ্বর বাজারে।

 শুক্রবার সকালে হাটে গিয়ে দেখা গেল, বাজারে উঠেছে গোপালভোগ ও গুটিজাতের আম। ২৫ মে জেলা প্রশাসন থেকে লোকনা, লক্ষণভোগ, রানীপছন্দ আম পাড়ার নির্দেশনা থাকলেও এই জাতের আম বাজারে নেই। কারণ এই জাতের আম গাছ থেকে পাড়ার এখনও উপযুক্ত হয়নি। ল্যাংড়া আম ৬ জুন, আমরুপালি ও ফজলি ১৫ জুন, আশ্বীনা ১০ জুলায় থেকে পাড়া শুরু হবে বলে জেলা প্রশাসকের নির্দেশনা রয়েছে।

বানেশ্বর ভূমি অফিস মাঠে খোলা আকাশের নিচে ভ্যানের ওপর সাজিয়ে আম বিক্রি করছেন হাতে গোনা কয়েকজন আম চাষী ও ব্যবসায়ী। আর করোনা ভাইরাসের কারণে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে এখনো আসা শুরু করেনি পাইকারি ব্যবসায়ীরা। এখন শুধু বিভিন্ন এলাকার দুই একজন ছাড়া স্থানীয় আড়তদার ও সাধারণ ক্রেতারা কিনছেন আম।

আবু সায়েদ নামে এক আড়তদার জানান, এখনও ঢাকাসহ বাইরের তেমন কোন পাঠি আসেনি আমরাই অল্পকিছু করে গোপালভোগ কিনছি। করোনার কারণে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ব্যবসায়ীরা এখানে এসে আম কিনে নিয়ে যেতে পারবে কিনা তা জানি না। বর্তমানে গোপালভোগ জাতের আম ১২শ থেকে ১৫শ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। আর গুটি জাতের আমের দাম প্রতি মণ ৫শ থেকে ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

পুঠিয়া উপজেলা কৃষি অফিসার শামসুন নাহার ভূইয়া জানান, আমাদের রাজশাহী অঞ্চলের পরিচালক স্যার সহ আমরা বৃহস্প্রতিবার বানেশ্বর বাজার আমের হাট পরির্দশন করেছেন। করোনার জন্য দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা ব্যবসায়ীদের থাকার জন্য হোটেল মালিকদের এবং আড়তদারদের সাথে কথা বলে সব ব্যবস্থা করা হয়েছে। পুঠিয়া কৃষি অফিস সবসময় আমের হাট মনিটরিং করবে।

তিনি আরও জানান, উপজেলায় এবার আমের উৎপাদন এরিয়া প্রায় ১৫২৭ হেক্টর এবং লক্ষমাত্রা ধরা হয়েছে ১৮,৩২৪ মে. টন। যা গতবছর ছিল ১৮,৩০০ মে. টন এবং বাগান ছিল প্রায় ১৫২৫ হে. এরিয়ায়। বৈরি আবহাওয়ার কারণে গত মৌসুমে এই এলাকায় আমের উৎপাদন লক্ষমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ১৮ হাজার তিনশত মে. টন এবং চলতি বছর উৎপাদন ধরা হয়েছে ১৮ হাজার তিনশত চব্বিশ মে. টন আম।

সুত্রঃ পদ্মা টাইমস২৪.কম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *