বিলুপ্ত প্রজাতির ধান মাঠে ফেরাতে চায় ব্রিবিলুপ্ত প্রজাতির ধান মাঠে ফেরাতে চায় ব্রি

দিঘা, ধলাকান্দি, বাঁশিরাজ-এমন সব বাহারি নামের শত প্রজাতির বিলুপ্তপায় ধান থেকে উচ্চফলনশীল ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ জাত আবিষ্কার করে মাঠে ফেরাতে চান ব্রির গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের বিজ্ঞানীরা।

ফরিদপুরসহ আশপাশের জেলা থেকে ইতোমধ্যেই বিলুপ্তপ্রায় দিঘাধানের ১৫টি জাত খুঁজে আনা হয়েছে। এখন সেগুলোর বীজ বর্ধন ও বৈশিষ্ট্যায়নের কাজ চলছে।

গবেষণার মাধ্যমে জাতগুলোকে উচ্চফলনশীল ও পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ জাতে পরিণত করা হবে বলে বিজ্ঞানীরা জানান।

ব্রির গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ফারুক হোসেন খান বলেন, “স্থানীয় জাতের ধানের মধ্যে অনেক পুষ্টিগুণ রয়েছে। পুষ্টিগুণের বৈশিষ্ট্যগুলো উচ্চফলনশীল জাতের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে স্থানীয় জাতকে উচ্চফলনশীল জাতে পরিণত করা হবে। এতে বিলুপ্ত জাতের বৈশিষ্ট্য ফিরে আসবে। ভাতের মাধ্যমে পুষ্টির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হবে।”

ব্রির গোপালগঞ্জ কার্যালয়ের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম জানান, স্থানীয় জাতের বান্দরজটা, লেতপাশা, উড়িচেঙড়া, কলারমোচা, গৌরকাজল, করচামুড়ি, খড়াদিঘা, কাপুড়াদিঘা খৈয়ামুরগি, মারচাল, রাজামোড়ল, বাঘরাজ, কালাহোরা এ অঞ্চল থেকে প্রায় বিলুপ্ত হতে চলেছে।

গোপালগঞ্জ কার্যালয়ে ইতোমধ্যেই বিলুপ্তপ্রায় একশ প্রজাতির স্থানীয় ধান সংগ্রহ করা হয়েছে। তাদের মধ্য থেকে লক্ষ্মীদিঘা, হিজলদিঘা, খৈয়ামটর, শিশুমতি, দুধকলম, দেবমণি, বাঁশিরাজ, মানিকদিঘা, রায়েন্দা, জাবরা, লালদিঘা ধান গবেষণা-মাঠে চলতি আমন মৌসুমে আবাদ করে জাত উন্নয়নে গবেষণা করা হচ্ছে।

জাহিদুল বলেন, বাংলাদেশে আগে সাড়ে ১২ হাজার প্রজাতির স্থানীয় ও দেশি ধান আবাদ হত। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউট দেশি আট হাজার ধানের জাত সংগ্রহ করে জিন ব্যাংক গড়ে তুলেছে। কৃষকের মাঠে বিদ্যমান ধানের জাতকে বিলুপ্তির হাত থেকে রক্ষা করা বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের একটি বড় লক্ষ্য।

“এ লক্ষ্যে আমরা স্থানীয় দেশি ধানের জাত সংগ্রহ করে মূল্যায়ন ও বৈশিষ্ট্যায়নের কাজ চালিয়ে যাচ্ছি। এটি ধান গবেষণার জিনব্যাংক সমৃদ্ধকরণে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে। এছাড়া স্থানীয় ও দেশি জাতের ধানের উন্নয়ন ঘটিয়ে নতুন করে বিলুপ্ত জাত কৃষকের কাছে ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এতে কৃষক স্থানীয় ও দেশি উচ্চফলনশীল ধানের আবাদ করে আমন মৌসুমে অধিক ধান ঘরে তুলতে পারবেন। এতে কৃষকের জীবনমানের উন্নয়ন ঘটবে।”

গোপালগঞ্জে এখনও অনেক কৃষক স্থানীয় বিভিন্ন জাতের ধানচাষ করেন।

সদর উপজেলার ঘোনাপাড়া গ্রামের মো. দবির উদ্দিন শেখ (৬৫) বলেন, “প্রতিবছর বোরো ধান কাটার পর আমরা জমিতে দিঘাধান ছিটিয়ে দেই। কোনো পরিচর্যা ছাড়াই বিঘাপ্রতি ৮-১০ মণ ধান পাই। এ ধানের উচ্চফলনশীল জাত পেলে আমাদের উৎপাদন বেড়ে যাবে।”

সুত্রঃ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *