সিরাজগঞ্জ জেলার বেলকুচি উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় উজান থেকে ধেয়ে আসা বৃষ্টির পানিতে তলিয়েছে কৃষকের শত শত একর বোরো ধানের ক্ষেত। গত সপ্তাহে উজানের জেলাগুলোতে অসময়ে টানা বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢলে সৃষ্ট এই বন্যায় একই সাথে পানির নিচে ডুবেছে কৃষকের স্বপ্ন।
আজ রবিবার (৩১মে) সরজমিয়ে গিয়ে জানা যায়, যমুনা তীরবর্তী এ উপজেলার বেলকুচি পৌরসভা ও সদর ইউনিয়ন সহ রাজাপুর, বড়ধুল ও দৌলতপুর ইউনিয়ের প্রায় ৪০০ একর পাকা ও অর্ধ-পাকা বোর ধানের ক্ষেত পানিতে ডুবেছে।
কৃষকরা জানান, আর মাত্র ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে ধান গুলো কাঁটার উপযুক্ত হতো। কিন্তু সে সুযোগ আর হলো না। অতীতে আমাদের অঞ্লে এরকম ঘটনা ঘটেনি। কিন্তু সম্প্রতি নিচু এলাকায় বোরো মৌসুমে ধান কাঁটার আগেই পানি চলে আসছে। ফলে আমাদের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হতে হচ্ছে।
সদর ইউনিয়েনের বাবলু শেখ নামের এক কৃষক বলেন, সারা বছর আমাদের ভাতের ব্যবস্থা হয় এই ফসল থেকে। করোনা পরিস্থিতির কারণে এমনিতেই জীবিকা নিয়ে চিন্তায় ছিলাম। সেই চিন্তা আরো বেড়ে গেল।
তৌহিদুল ইসলাম নামের এক কৃষক জানান, আমাদের অনেকে কৃষি ঋণের মাধ্যমে চাষাবাদ করেছি। এ বছর ফলন ভালো হয়েছিল। তাই ভেবেছিলাম, ঋণ পরিষোধ করতে পারব কিন্তু সে আর হলো না। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কি খাব সেই চিন্তায় আছি!
এ অবস্থায় সরকারের সহায়তা চেয়েছেন এসব প্রান্তিক কৃষক।
ক্ষতির বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কল্যান প্রসাদ পাল বলেন, হঠাৎ বর্ষা দেখা দেওয়ায় আমাদের বেলকুচি উপজেলাতে এ পর্যন্ত ১৭০ হেক্টর জমির আবাদি ফসল পানিতে নিমর্জিত হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের তালিকা তৈরি করে কৃষি অধিদপ্তরে প্রেরণ করবো। অন্যান্য বছরে সরকারের পক্ষ থেকে কৃষকদের সহায় করে আসছে। আশা করছি এ বছরে সরকার কৃষকদের প্রতি সুদৃষ্টি রাখবেন। তাহলে কৃষকেরা যে ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে। তা অনেকটা পুষিয়ে উঠতে পারবে বলে আমি বিশ্বাস করি।
কৃষকদের সহায়তার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সিফাত-ই-জাহান আমরা প্রান্তিক পর্যায়ে যে সকল কৃষক বর্নার কারণে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের তালিকা তৈরি করছি। তালিকা তৈরি কাজ শেষ হলে তা উর্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। এর ফলে যদি কৃষকদের কোন প্রনোদনা আসে তবে তা তাদের মধ্যে সুষ্ঠ বন্টন করা হবে।
সুত্রঃ আলোকিত সকাল