ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত, সাজেক খুলে দেওয়ার দাবিব্যবসায়ীদের মাথায় হাত, সাজেক খুলে দেওয়ার দাবি

নিউজ ডেস্কঃ
করোনা সংকটে খাগড়াছড়ির পর্যটন খাতে ব্যবসা নেই। জেলা সদরের ৩০টির বেশি হোটেল-মোটেল ও রিসোর্ট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা পড়েছেন বিপুল ক্ষতির মুখে। মালিক থেকে শুরু করে ছোটখাটো দোকানিরাও পড়েছেন বেকায়দায়। রেস্টুরেন্টগুলোও প্রতিদিন লোকসান দিচ্ছে। এ ছাড়া খাগড়াছড়ির ওপর দিয়ে যাওয়া রাঙামাটি জেলার সাজেক পর্যটন স্পটের শতাধিক রিসোর্ট ব্যবসায়ীর মাথায় হাত। যানবাহন মালিকরাও হাত গুটিয়ে বসে আছেন। সব মিলিয়ে পর্যটন ব্যবসায় প্রায় শতকোটি টাকার ক্ষতি হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা।

করোনাভাইরাস সংক্রমণ বৃদ্ধির কারণে গত ১৮ মার্চ স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশে খাগড়াছড়ি এবং সাজেকের সব পর্যটন স্থাপনা বন্ধ করে দেওয়া হয়। তবে আনুষ্ঠানিকভাবে সাজেকের হোটেল, রিসোর্ট, কটেজ ও রেস্তোরাঁগুলো বন্ধ হয়ে যায় ২১ মার্চ থেকে।

বর্তমানে খাগড়াছড়ি ও সাজেকের সব পর্যটন স্থাপনা ও স্পট ফাঁকা। আলুটিলা পর্যটন স্পট, রিছাং ঝরনা, জেলা পরিষদ পার্ক এখন শুধুই খাঁ খাঁ করছে। এগুলোর প্রবেশমুখে বড় বড় তালা ঝুলছে। দেশ-বিদেশের পর্যটন দূরে থাক; স্থানীয় লোকজনও যাচ্ছে না সেখানে। এর বাইরে মায়াবিনী লেক, তৈদু ঝরনা, পানছড়ির অরণ্যকুটির, দেবতা পুকুর, মানিকছড়ি রাজবাড়ি, রামগড়ে বিজিবির জন্মস্থানসহ পর্যটকদের আকৃষ্ট করে এমন সব পর্যটন স্থাপনা কেউ দেখতে আসছে না। ফলে খাগড়াছড়িতে ৩০টির বেশি হোটেল, মোটেল ও রিসোর্ট একদম খালি। স্থানীয় প্রশাসনের নির্দেশের পর থেকে সেগুলোতে তালা লাগিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। জেলার চাঁদের গাড়ি খ্যাত খোলা জিপ, পিকআপ গাড়িগুলো চলছে না। রেস্তোরাঁয় নেই আগের মতো জমজমাট ব্যবসা। রাঙামাটি জেলার সাজেক ও খাগড়াছড়ির হোটেল, মোটেল, রিসোর্ট, কটেজ, রেস্তোরাঁ ও যানবাহনের সঙ্গে জড়িত হাজারো শ্রমিক বেকার হয়ে পড়েছেন। এসবের মালিকরা ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

খাগড়াছড়ি হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া জানান, হোটেল মালিকরা খুবই দুশ্চিন্তার মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন। দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় তাঁরা ব্যাবসায়িকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত। শুধু খাগড়াছড়ির হোটেল, মোটেল, রেস্তোরাঁ এবং যানবাহন মিলিয়ে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতির মধ্যে পড়েছেন। সহসাই পর্যটন ব্যবস্থা চালু না হলে ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন না বলে আশঙ্কা তাঁর।

সাজেক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি সুবর্ণ ত্রিপুরার মতে, যে ক্ষতি হয়ে গেছে তা কাটিয়ে উঠতে আরো কয়েক বছর লাগতে পারে। তিনি ক্ষতির পরিসংখ্যান বর্ণনা করে জানান, পুরোদমে চালু থাকলে দৈনিক প্রায় এক কোটি টাকার লেনদেন হতো সাজেকেই। দীর্ঘ সময় ধরে বন্ধ থাকার কারণে সাজেকের বহু হোটেল-রিসোর্টের স্টাফরা চলে গেছেন। অনেক হোটেলের মালামাল নষ্ট এবং হারিয়ে গেছে বলেও জানান তিনি।

খাগড়াছড়ির অন্যতম পর্যটন ব্যবসায়ী অনন্ত বিকাশ ত্রিপুরা খাগড়াছড়ি ও সাজেকের পর্যটন স্থাপনাগুলো খুলে দেওয়ার জন্য প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন। তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে পর্যটন ব্যবসা চালু রাখা হবে বলেও অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন।
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *