ভাগ্য বদলে দিলো তিস্তার চর

নিউজ ডেস্কঃ
লালমনিরহাটে তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা নতুন নতুন চরে ফসল ফলিয়ে নিজেদের ভাগ্য পরিবর্তন করেছেন হাজারো কৃষক। বাজারে ভালো চাহিদা থাকায় জমি থেকেই বিক্রি হয়ে যাচ্ছে এসব ফসল। এতে পাল্টে যাচ্ছে তিস্তার চরাঞ্চলের কৃষকদের জীবনযাত্রার মান।
সরেজমিনে দেখা গেছে, তিস্তা নদীর তীরবর্তী বালাপাড়া, কুটিরপাড় বাঁধসহ শতাধিক চরাঞ্চল ও গ্রামে লাল শাক, কলমি শাক, মিষ্টি কুমড়াসহ বিভিন্ন ধরনের শাক সবজির ব্যাপক আবাদ হয়েছে। স্বল্প খরচের কারণে এসব শাকসবজি বিক্রি করে ভালো লাভ পাচ্ছেন কৃষকরা।

চরাঞ্চলের কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক সময় অভাব-অনটন ছিল তাদের নিত্যসঙ্গী। চরের জমিতে ফলানো ফসল সেই অভাব দূর করে দিয়েছে। সচ্ছলতার মুখ দেখতে শুরু করেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চলের এসব কৃষক।

কৃষকরা জানান, চরাঞ্চলের জমি অসমতল ও বালির পরিমাণ বেশি হওয়ায় ইরি-বোরো ধান আবাদ করা যায় না। ধানের পরিবর্তে আখ, লাল শাক, পাট, কলমি শাক, বাদাম, মরিচ, পুঁই শাকসহ ৬-৭ ধরনের শাকসবজি চাষ করা যায়। এক মাসের মধ্যে এসব ফসল বাজারে বিক্রি করা যায়।

চর গোকুন্ডার কৃষক ফয়জার আলী বলেন, আমার সামান্য জমি ছিল, তা তিস্তার গর্ভে চলে গেছে। এ কারণে প্রতি বছর এই সময় তিস্তা নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে আলু, শিম, করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাদাম চাষ করি। ফলন ভালো হওয়ায় পরিবার নিয়ে সুখেই আছি।

কালীগঞ্জ উপজেলার চর বৈরাতি গ্রামের মমিনুল-আনোয়ারা দম্পত্তি বলেন, বাপ-দাদার ভিটে তিস্তার স্রোতে বিলীন হয়ে গেছে। গোয়াল ভরা গরু আর গোলা ভরা ধান ছিল আমাদের। বর্তমানে কিছুই নেই। এখন সংসার চালাতে তিস্তার বালুচরে ভুট্টা, রসুন, পেঁয়াজ ও আলু চাষ করি।

লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক শামীম আশরাফ বলেন, এ বছর চরাঞ্চলের ৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে সবজি চাষ হয়েছে। কম খরচে লাভবান হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এ বছর নতুন নতুন চরে শাকসবজির আবাদ হয়েছে অনেক বেশি। রাসায়নিক সার ও কীটনাশকের পরিবর্তে জৈব সার ব্যবহার করায় আলু, শিম, করলা, লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাদামসহ বিভিন্ন সবজির বাম্পার ফলন ফলেছে। চরাঞ্চলের এসব জমি কাজে লাগাতে আমরা কৃষকদের নিয়মিত পরামর্শ দিয়ে আসছি। তিস্তার চরে উৎপাদিত এসব সবজি কিছুটা হলেও চাহিদা পূরণে সহায়তা করবে বলে আমরা আশাবাদী।

সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *