নিউজ ডেস্কঃ
দেশের খাদ্য মজুত বাড়াতে ১৭৬ কোটি টাকা ব্যয়ে ভারত থেকে আরও ৫০ হাজার মেট্রিক টন নন বাসমতি সেদ্ধ চাল আমদানির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি।
বুধবার (৩১মার্চ) অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে এক ভার্চুয়াল সভায় ক্রয় প্রস্তাবগুলোর অনুমোদন দেয়া হয়। সভায় কমিটির সদস্য, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সিনিয়র সচিব, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব এবং ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। সভা শেষে অনুমোদিত ক্রয় প্রস্তাবের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন অর্থমন্ত্রী।
অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর বিষয়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের অতিরিক্ত সচিব ড.শাহিদা আক্তার জানান, আজ (বুধবার) সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির ১৩তম সভায় ৭টি প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়। এর মধ্যে মোট ৬টি ক্রয় প্রস্তাবের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। এতে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৯৫৭ কোটি ৪২ লাখ৷ ৩৮ হাজার ৮৮৫ টাকা। অনুমোদিত প্রস্তাবগুলোর মধ্যে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের দুটি, শিল্প মন্ত্রণালয়ের দুটি, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের একটি, খাদ্য মন্ত্রণালয়ের একটি এবং নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব ছিল।
ড. শাহিদা আক্তার বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন খাদ্য অধিদফতর কর্তৃক ৫০ হাজার মেট্রিক টন (+৫%) নন-বাসমতি সিদ্ধ চাল কেনার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে ব্যয় হবে ১৭৬ কোটি ৩৮ লাখ ৪০ হাজার টাকা। ভারতের মেসার্স বাগাদিয়া ব্রাদার্স প্রাইভেট লিমিটেড এই চাল সরবরাহ করবে। প্রতি মেট্রিক টন চালের দাম পড়বে ৪১৬ মার্কিন ডলার।’
তিনি আরও বলেন, ‘শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ কেমিক্যাল ইন্ডাস্ট্রিজ করপোরেশন (বিসিআইসি) কর্তৃক ৩০ হাজার মেট্রিক টন ব্যাগড গ্র্যানুলার ইউরিয়া সার কেনার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। এতে ব্যয় হবে ৯০ কোটি ৫৯ লাখ ৯১ হাজার ৭৫০ টাকা। কর্ণফুলী ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেড (কাফকো), বাংলাদেশ এই সার সরবরাহ করবে।’
অনুমোদিত অন্যান্য প্রস্তাবগুলো হলো- সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের অধীন সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর কর্তৃক ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে মেঘনা সেতু এবং গোমতী সেতুর টোল আদায় কাজে নিয়োজিত রয়েছে সার্ভিস প্রোভাইডার কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেম (সিএনএসএল)। সংস্থাটির মেয়াদ ২০২১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৬ মাস বাড়ানোর একটি অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে আনুমানিক ৩৫ কোটি ৫৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকা।
নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক ১০টি ১২টন বোলার্ড পুল টাগবোটসহ খুচরা যন্ত্রাংশ ডকইয়ার্ড অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস এর কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে ক্রয়ের একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এতে ব্যয় হবে ১৬৬ কোটি ৯৭ লাখ টাকা।
এছাড়া জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের অধীন বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) কর্তৃক বসুন্ধরা অয়েল এন্ড গ্যাস কোম্পানি লিমিটেড (বিওজিসিএল) এর অধীন বসুন্ধরা বিটুমিন/অ্যাসফল্ট প্রোডাকশন প্ল্যান্ট এর কাঁচামাল হিসেবে ১ লাখ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল জি টু জি ভিত্তিতে কেনার একটি প্রস্তাবে অনুমোদন দেয়া হয়েছে। ইন্দোনেশিয়া ভিত্তিক পিটি বুমি সিয়াক পুসাকু (বিএসপি) ২০২১ সালের মার্চ মাসে ১ লাখ মেট্রিক টন ক্রুড অয়েল সরবরাহ করবে। এ জন্য ব্যয় হবে ৪৩১ কোটি ১৪ লাখ টাকা।
বৈঠকে শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীন যমুনা ফার্টিলাইজার কোম্পানি লিমিটেডের (জেএফসিএল) জন্য রিফর্মড গ্যাস ওয়েস্ট হিট বয়লার সহ যন্ত্রপাতি কেনার একটি ক্রয় প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে কমিটি। জার্মানির মেসার্স বরসিক প্রসেস হিট এক্সচেঞ্জ জিএমবিএইচ-এর কাছ থেকে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতিতে এসব যন্ত্র সংগ্রহ করা হবে। এজন্য ৫৬ কোটি ৬৫ লাখ ৪১ হাজার ১৩৫ টাকা ব্যয় হবে।
এর আগে অর্থনৈতিক বিষয়ক সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিতে ১১ তম বৈঠকে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের একটি প্রস্তাব নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে। প্রস্তাবটি হলো, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রাডার সিস্টেমসহ অন্যান্য যন্ত্রপাতি সরকারি অর্থায়নের পরিবর্তে সংস্থার নিজস্ব অর্থায়নে ক্রয়ের নীতিগত অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
সুত্রঃ জাগো নিউজ