নিউজ ডেস্কঃ
প্রতিবছর রেকর্ডহারে ভুট্টার আবাদ হয় চুয়াডাঙ্গা জেলায়। এবারো রেকর্ড পরিমাণ জমিতে ভুট্টার আবাদ করেছেন এখানকার কৃষকরা। তবে ভুট্টার আবাদে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে পোকা ফল আর্মিওয়ার্ম। ফসল ধ্বংসকারী এ পোকার আক্রমণে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন ভুট্টা চাষিরা। কষ্টের ফসল রক্ষা করতে কৃষি বিভাগে ছুটছেন তারা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৪৮ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এরই মধ্যে জেলার চার উপজেলায় ৩৭ হাজার ৭০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছেন কৃষকরা। আগাম আমন জাতের ধান কাটার পর ওই জমিতে ভুট্টার আবাদ করেন চাষিরা। বিগত এক দশক ভুট্টার আবাদে দেশের শীর্ষে রয়েছে চুয়াডাঙ্গা। কিন্তু কৃষকের হাসি ম্লান করে দিয়েছে ভুট্টা ক্ষেতে ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণ।
২০১৮ সালের নভেম্বেরের প্রথমে চুয়াডাঙ্গা জেলার কয়েকটি এলাকায় ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণের উপস্থিতি টের পাওয়া যায়। সীমান্তবর্তী এলাকা হওয়ায় পার্শ্ববর্তী ভারত থেকে এ পোকা এ অঞ্চলে আক্রমণ করেছে বলে মনে করেছে কৃষি বিভাগ।
সরেজমিনে চুয়াডাঙ্গার চারটি উপজেলার অধিকাংশ এলাকার ভুট্টাক্ষেতে ফল আর্মি ওয়ার্মের আক্রমণ দেখা গেছে। ভুট্টাক্ষেতে কচি ডগায় বিধ্বংসী পোকার উপস্থিতি দৃশ্যমান। তবুও মেলছে না কোনো সমাধান।
চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার হাজরাহাটি গ্রামের ভুট্টাচাষী আনিস সরদার জানান, অন্যান্য ফসলের তুলনায় এ এলাকায় ভুট্টার আবাদ বেশি হয়। প্রতিবার তিনিও ভুট্টার চাষ করেন। গতবছর তার ক্ষেতে ¯^ল্প পরিসরে ফল আর্মিওয়ার্মের আক্রমণ দেখা দেয়। তবে এবার সেই আক্রমণের পরিমাণ বেড়েছে আশঙ্কাজনকহারে। ক্ষেতের অধিকাংশ কচি ডগায় পোকার উপস্থিতি রয়েছে। সেখান থেকেই ফসলের ক্ষতি করছে।
দামুড়হুদা উপজেলার মুক্তারপুর গ্রামের কৃষক আব্দুর রাজ্জাক জানান, প্রতিবারই ফল আর্মিওয়ার্মের উপস্থিতি পাওয়া যায়। তবে এখনো পর্যন্ত কোন প্রতিষেধক তৈরি হয়নি। যার ফলে এই পোকার সঙ্গে যুদ্ধ করে ফসল ফলানো বেশ কঠিন। এভাবে চলতে থাকলে ভবিষ্যতে ভুট্টা আবাদ থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলী হাসান জানান, গত কয়েক বছর ধরে ভুট্টাক্ষেতে ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু এতে উৎপাদন ব্যাহত হয়নি। বিগত কয়েক বছর থেকে ভুট্টা আবাদে দেশের শীর্ষে অবস্থান করছে চুয়াডাঙ্গা জেলা। এবারো ভুট্টা আবাদে দেশের শীর্ষ অবস্থানে থাকবে চুয়াডাঙ্গা।
তিনি আরো জানান, শীতে তাপমাত্রা কমে গেলে ফল আর্মিওয়ার্ম পোকার আক্রমণ তুলনামূলক হারে কমে যাবে। চাষিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সে বিষয়ে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দিচ্ছেন কৃষি বিভাগের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। আন্তর্জাতিক ভুট্টা ও গম উন্নয়ন কেন্দ্র ও কৃষি বিভাগ যৌথভাবে ফল আর্মিওয়ার্ম দমনে কাজ করে যাচ্ছে।
সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ