মাছ চাষে দেশেই বিদেশের আয় নরেনেরমাছ চাষে দেশেই বিদেশের আয় নরেনের

নিউজ ডেস্কঃ
উন্নত জাতের মাছ চাষ করে নিজেদের ভাগ্য বদল করেছে পিরোজপুরের নাজিরপুর উপজেলার দরিয়াবাদ গ্রামের নরেন হালদারের পরিবার। তাদের দেখাদেখি ওই গ্রামের অনেকেই মাছ চাষে ঝুঁকছেন। মাছ চাষে সফলতা পাওয়ায় নরেন হালদার পেয়েছেন সরকারি স্বীকৃতিও।

পেশায় ফর্নিচারের কারিগর অধিক অর্থ উপার্জনের জন্য ছয় বছর আগে বিদেশে (ইয়েমেন) পাড়ি জমানোর জন্য মন স্থির করেন নরেন হালদার। আর এজন্য তিনি বিভিন্ন লোকের কাছ থেকে ধার দেনা ও সুদে টাকা সংগ্রহ করেন। তবে হঠাৎ করে ইয়েমেনে যুদ্ধ লেগে যাওয়ায় আর বিদেশ যাওয়া হয়নি নরেনের। বিদেশ যেতে না পারলেও, ফেরত পাননি ট্রাভেল এজেন্সিতে জমা দেয়া টাকা। ফলে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে ঘুরতে থাকেন অনেকটা ফেরারি আসামির মতো।

নরেন হালদার ও তার স্ত্রী শ্যামলী জানান, পার্শবর্তী গ্রামের এক মাছ চাষির পরামর্শে একটি পরিত্যক্ত ঘের লিজ নিয়ে শুরু করেন কৈ ও তেলাপিয়া মাছের চাষ। সেই থেকে শুরু। এরপর থেকে আর পেছনে তাকাতে হয়নি তাদের। দেশেই তারা বিদেশে উপার্জনের চেয়ে বেশি টাকা আয় করছেন। সেই আয়ে আস্তে আস্তে দেনা শোধের পাশাপাশি পরিবারে ফিরে এসেছে আর্থিক সচ্ছলতাও।

স্ত্রীর সহযোগিতা আর কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে এখন তিনি নাজিরপুরে একজন আদর্শ ও সফল মাছ চাষি।

স্থানীয় এক ব্যক্তির কাছ থেকে লিজ নেয়া ৭০ শতাংশ জমিতে বর্তমানে দুইটি ঘের রয়েছে তাদের। এখান থেকে প্রতি তিন মাস পর পর মাছ বিক্রি করেন। আর এ থেকে প্রতিবারই দুই লক্ষাধিক টাকা লাভ করেন। এছাড়া ঘেরের পাড়ে সবজি উৎপাদন করেও উপার্জন হয় তার। লাভের এই অর্থ দিয়েই তিন মেয়ের লেখাপড়া চালানোর পাশাপাশি সুন্দরভাবে ভরণপোষণ করছেন পরিবারের। আর পরিশোধ করেছেন পেছনের সব দেনা।

বিভিন্ন এলাকা থেকে পাইকারি ক্রেতারা নরেনের ঘের থেকে মাছ কিনে নিয়ে যান। আর নরেনের দেখাদেখি দরিয়াবাদ গ্রামে অনেকেই ঝুঁকছেন মাছ চাষের প্রতি।

উপজেলা মৎস কর্মকর্তা তপন কুমার বেপারী জানান, নরেন হালদার আদর্শ একজন মাছ চাষি। তার মাছ চাষে লাভবান হতে উপজেলা মৎস অফিস থেকে দেয়া হচ্ছে নানা পরামর্শ। তবে নরেন হালদারের দাবি মাছের খাবারের দাম প্রতিনিয়ত বৃদ্ধি পাওয়ায় তারা কিছুটা সমস্যায় পড়ছেন। অন্যদিক সরকার মাছ চাষিদের সহজ শর্তে ঋণের ব্যবস্থা করলে, মাছ চাষ দিন দিন আরো বৃদ্ধি পাবে।

সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *