পাটের ভাল দাম পাওয়ায় খুশি মানিকগঞ্জের পাট চাষীরা। পাটের ভাল ফলন ও কাঙ্খিত দাম পাওয়ায় দিনে দিনে মানিকগঞ্জে পাটের আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলার সর্বত্রই পাটের চাষ হয়ে থাকে। তবে সাটুরিয়া, ঘিওর ও হরিরামপুর উপজেলায় পাট বেশি চাষ হয়।
এবার জেলায় পাট আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে। চলতি বছরের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩৭৩৫ হেক্টর আর চাষ হয়েছে ৩৭৫০ হেক্টর জমিতে। গত বছর পাট চাষ হয়েছিল ৩৬০২ হেক্টর। গত বছর যে দামে পাট বিক্রী হয়েছে এবার তার চেয়ে অনেক বেশি দামে পাট বিক্রী হচ্ছে।
ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন মানিকগঞ্জ সদরের ত্বরা হাটে সরেজমিনে দেখা যায়, পাট ক্রেতা বিক্রেতা দুইজনই খুশি। পাট ক্রেতা আফজাল হোসেন বলেন, আমি পাট কিনে মহাজনকে দেই। এ হাটে মূল মহাজন আছে ৩ জন। আর আমার মতো প্রতিনিধি আছে ৩০ থেকে ৪০ জন।
তিনি আরও বলেন, এবার পাটের বাজার ভালো। গত বছর এসময় পাটের দাম ছিল ১৮০০ থেকে ২ হাজার টাকা মণ। এখন বাজারে পাটের দাম সর্বনিম্ন ২ হাজার ৬০০ টাকা থেকে ৩ হাজার ১০০ টাকা। এ হাটে সাধারণত দুই জাতের পাট বিক্রী হয়- দেশী ও তুষা।
মহাজনের আরেক প্রতিনিধি সানোয়ার রহমান বলেন, এবার পাটের দাম খুব ভাল। চাহিদাও বেশি। এক মণ ভাল পাট ৩ হাজার ১০০ টাকা করে বিক্রী হচ্ছে। যা গত বছরের তুলনায় অনেক বেশি। এবার চাষীরাও ভাল দাম পাচ্ছে আমাদেরও বেশি লাভ হচ্ছে।
পাট বিক্রেতা মোঃ মালেক, সবুর , আব্দুল সহ অনেকেই বলেন, এবারের মতো দাম থাকলে এলাকার লোকজন বেশি করে পাট চাষ করবে। তারা আরো বলেন, ইরি ধানে কোনও লাভ নাই। আগামীতে আরও বেশি করে পাট চাষ করবে বলে চাষীরা জানান।
তবে কৃষকরা কিছু সমস্যার কথাও বলেন। তারা বলেন, পাট পঁচানোর জন্য খাল বিলে পানি নাই। এখন পাটের ভরা মৌসুম। পানি না আসলে পাট পচানো সমস্যা হবে। এছাড়া সকল প্রকার সার কিটনাশকের দাম বেশি। শ্রমিকের দাম বেশি। ধান কাটার মতো যদি পাট কাটার ম্যাশিন থাকতো তাহলে ভাল হতো। পাট বিক্রেতারা হাটে খাজনা আদায় বেশি বলেও অভিযোগ করেন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাহজাহান আলী বিশ্বাস বলেন, অনুকূল আবহাওয়া ও আমাদের পরামর্শ মত কৃষকরা কাজ করায় এবার ফলন ভাল হয়েছে এবং দামও ভাল। ভাল দাম পাওয়ায় কৃষকরা লাভবান হচ্ছে। সেই সাথে প্রতিবছর মানিকগঞ্জে পাটের আবাদ বাড়ছে। গতবছর জেলায় পাট আবাদ হয়েছিল ৩৬০২ হেক্টর জমিতে। এবার ৩৭৫০ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে।
সুত্রঃ বিডি-প্রতিদিন