মাল্টা চাষে স্কুল শিক্ষকের সাফল্যমাল্টা চাষে স্কুল শিক্ষকের সাফল্য

নিউজ ডেস্কঃ

বাড়ির পাশে অনাবাদি জমিতে মাল্টা চাষ করে সফলতা পেয়েছেন রংপুরের কাউনিয়া উপজেলার দক্ষিণ ধর্মেশ্বর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন।
বর্তমানে তার বাগানের এখন ঝুলছে শত শত মাল্টা। শিক্ষকতার পাশাপাশি তিনি দীর্ঘ দিন ধরে কৃষি কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। স্কুলের সঙ্গে রয়েছে শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেনের বাড়ি। তার বাড়ির পেছনে পতিত অনাবাদি জমিতে গড়ে তুলেছেন মাল্টা বাগান।

তিনি জানান, ছেলের জন্য বাজারে মাল্টা কিনতে গিয়ে দাম বেশি দেখে বাড়িতে এসে মাল্টার বাগান করার পরিকল্পনা করেন। এরপর ২০১৭ সালের বাড়ির পাশে অনাবাদি ১৬ শতাংশ জমিতে উন্নত জাতের ৩৬ টি মাল্টার চারা রোপণ করেন। তিন বছর পরিচর্যা করার পর ২২টি গাছে ফল আসে। এই বছর সব গাছেই ফল এসেছে। এক একটি গাছে ২০০ থেকে ২৫০ টি করে মালটা ধরেছে। কিছুদিন পরই গাছে মাল্টা পাকতে শুরু করবে। এ বছর নিজের বাগানে বাকল দিয়ে গ্রাফটিং করে প্রায় তিন শতাধিক মাল্টা চারা উৎপাদন করেন। আর এসব মাল্টার চারা তার অনাবাদি ৬০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ করবেন।

প্রধান শিক্ষক মোফাজ্জল হোসেন জানান, মাল্টা গাছের চারা রোপণের দুই বছরের মধ্যে ফলন দিতে শুরু করে। তিন বছর পর একটি গাছে পূর্ণাঙ্গভাবে ফল ধরা শুরু করে। প্রতি মৌসুমে এক একটি গাছে ৩৫০ থেকে ৪০০টি করে মাল্টা ধরে। গত বছর তিনি ২২ টি গাছের মাল্টা আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশীদের বিলিয়ে প্রায় ৫০ হাজার টাকার মাল্টা বিক্রি করেছেন। এ বছর মাল্টা বিক্রি করে প্রায় এক থেকে সোয়া লাখ টাকা আয় করবেন বলে জানান। তার মাল্টার বাগান দেখে এলাকার অনেকেই মাল্টাবাগান করার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।

মোফাজ্জল হোসেনের স্ত্রী রাসনা বেগম জানান, গত তিন বছর ধরে শিক্ষকতার পাশাপাশি মাল্টার বাগান পরিচর্যা করে আসছেন। তাদের দুই ছেলের নামে মোফাজ্জল তার বাগানের নাম রেখেছেন ‘রাশেদ-রাতুল মাল্টা গার্ডেন’।

এলাকাবাসী মোস্তাফিজার রহমান জানান, মোফাজ্জল মাস্টারের মাল্টা চাষ দেখে এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। তার অভিযোগ কৃষি বিভাগ থেকে মাল্টা চাষে কোনো পরামর্শ পাওয়া যায় না। পরামর্শ পেলে এলাকার অনেকেই মাল্টা চাষ করতেন। একই কথা জানালের এলাকার একাধিক আগ্রহী মাল্টা চাষি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন বলেন, উঁচু সমতল ভূমির দোআঁশ মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। মাাল্টা চাষে সার, পোকামাকড় দমনে বিলাইনাশক ব্যবহার ও সঠিক পরিচর্যা করলে মাল্টার ফলন ভালো পাওয়া যায়।

কাউনিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শাহনাজ পারভিন বলেন, উঁচু সমতল ভূমির দোআঁশ মাটি মাল্টা চাষের জন্য বেশ উপযোগী। প্রাকৃতিক সার, পোকামাকড় দমনে বিশেষ উপায়ে তৈরি বালাইনাশক ব্যবহার ও সঠিক পরিচর্যা করলে মাল্টার ফলন ভালো পাওয়া যায়। উপজেলায় বেশ কয়েকজন নিজ উদ্যোগে মাল্টা বাগান করেছেন। তারা ভালো সুফলও পেয়েছেন।

কৃষি কর্মকর্তা বলেন, ছোট আকারে মাল্টা বাগান করতে প্রায় ২৫ শতাংশ জমি লাগে। কৃষকেরা মাল্টা চাষে আগ্রহ প্রকাশ করলে ঊর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো এবং এর প্রকল্প নিয়ে আসার চেষ্ঠা করা হবে।

সুত্রঃ ডেইলি বাংলাদেশ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *