নিউজ ডেস্কঃ
যত্রতত্র পেলেই খাওয়া যাবেনা, উপযোগী আবহাওয়া ও পরিমিত তাপমাত্রায় জৈবিক উপাদানের স্বাস্থ্য উপকারী মাশরুম টি অভিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত চাষী উদ্যোগতার কাছ থেকেই পাবেন।
এটি মাত্রাতিরিক্ত দূষণ, অনিয়ন্ত্রত জীবন এবং স্ট্রেসের কারণে যেভাবে আমাদের শরীরের প্রয়োজন সঠিক এবং পুষ্টিকর খাদ্য। আর এই পুষ্টিকর খাদ্য হিসেবে মাশরুম কিন্তু অনেক উপকারী। একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে নিয়মিত এই প্রাকৃতিক উপাদানটি খাওয়া শুরু করলে শরীরের ভেতরে বেশ ভালো কিছু পরিবর্তন ঘটতে থাকে। কিন্তু কি পরিবর্তন? আসুন তবে জেনে নিই নিয়মিত মাশরুম খেলে আমাদের কী কী উপকার হয়।
১. রক্তচাপকে স্বাভাবিক রাখে:
ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ বর্তমান সময়ে সবারই একটি সাধারণ সমস্যা। অনেকেই একে তেমন একটা গুরুত্ব দেন না। কিন্তু এটি আমাদের জন্য বেশ ক্ষতিকর। আর যারা এই রক্ত চাপ নিয়ে চিন্তিত তাদের জন্য মশরুম কিন্তু অনেক উপকারী। কারণ মাশরুমে আছে প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম যা আমাদের শরীরের অভ্যন্তরীণ সোডিয়ামের ভারসাম্য ঠিক রাখার মধ্যে দিয়ে আমাদের রক্ত চাপ বা ব্লাড প্রেসারকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে।
২. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে শক্তিশালী করে:
আমাদের সুস্থ থাকার জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা শক্তিশালী থাকা অনেক জরুরী। আর এই রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী রাখতে মাশরুম অনেক উপকারী। মাশরুমে রয়েছে আর্গোথিয়োনাইন নামের বিশেষ এক ধরনের অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই অ্যান্টি অক্সিডেন্টটি আমাদের দেহের ইমিউনিটি বাড়াতে অনেক বড় ভূমিকা পালন করে। এর ফলেই আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠে। এতে সুস্থ জীবনের পথ প্রশস্ত হয়। বিশেষ করে, মাশরুমের মধ্যে থাকা প্রকৃতিক অ্যান্টিবায়োটিক আমাদের নানারকম সংক্রমণের আশঙ্কা কমিয়ে তোলে।
৩. অ্যানিমিয়ার প্রকোপ কমায়:
অ্যানিমিয়ার বা রক্ত সল্পতা খুবই সাধারণ কিন্তু মারাত্বক একটি রোগ। আমাদের শরীরে যখন আয়রনের পরিমাণ কমতে শুরু করে তখন লোহিত রক্ত কণিকার উৎপাদন হ্রাস পায়। আর এতেই অ্যানিমিয়ার আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। আর এ থেকে রেহাই পেতে মাশরুমের বিকল্প হয় না বললেই চলে। কারণ এই প্রকৃতিক উপাদানটি আয়রনে ভরপুর। ফলে এ রোগে আক্রান্ত রোগীদের মাশরুম খাওয়ালে সবচেয়ে বেশি উপকার পাওয়া যায়।
৪. হাড়কে শক্ত করে:
ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ হওয়ার মাশরুম হওয়ায় নিয়মিত খেলে আস্তে আস্তে হাড়ের গঠনে উন্নতি ঘটতে শুরু করে। সেই সাথে নানা রকম হাড়ের রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়। এছাড়া আমাদের হাড়কে শক্ত ও মজবুত করে তুলতে মাশরুম অনেক কার্যকর।
৫. ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে:
ক্যান্সার রোগের আশঙ্কা কমায় মাশরুম। শুনতে অবাক লাগলেও এটি কিন্তু সত্য। কারণ মাশরুমে রয়েছে বিটা-গ্লকেন এবং লাইনোলিক অ্যাসিড নামে দুটি উপাদান থাকে, যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করার পর কার্সিনোজেনিক গ্রোথ হতে দেয় না। সেই সাথে শরীর থেকে সব বিষাক্ত টক্সিক উপাদান বের করে দেয়। এর ফলে ক্যান্সারের প্রকোপ অনেক কমে যায়।
৬. খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়:
মাশরুমে রয়েছে ফাইবার এবং উপকারি কিছু এনজাইম। যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করার সাথে সাথেই রক্তের খারাপ কোলেস্টেরল বা এল ডি এল মাত্রা কমাতে শুরু করে। অপরদিকে উপকারি কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়াতে শুরু করে । এর ফলে হার্টের কোনো ধরনের অসুখ হওয়ার আশঙ্কা অনেক কমে যায়।
৭. ডায়াবেটিকস দূরে রাখে:
যদি আপনি ডায়াবেটিকসের আশঙ্কায় ভুগে থাকেন তাহলে আজই আপনার খাদ্যতালিকায় মাশরুম যোগ করে নিন। কারণ মাশরুমে রয়েছে প্রাকৃতিক ইনসুলিন যা আমাদের শরীরে প্রবেশ করা মাত্রই আমাদের রক্তে শর্করার মাত্রা কমাতে শুরু করে। ফলে ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা কমে। এছাড়াও মাশরুম,লিভার, প্যানক্রিয়াস এবং অন্যান্য এন্ডোক্রনিক গ্ল্যান্ডের কর্মক্ষমতা বাড়াতেও বিশেষ ভূমিকা পালন করে।
৮. পুষ্টির চাহিদা পূরণ করে:
একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যে, শরীরকে ভালোভাবে চালাতে যেসব পুষ্টিকর উপাদানের প্রয়োজন হয়, তার প্রায় সবগুলোই আছে মাশরুমে। সব রকমের ভিটামিন ও খনিজ উপাদান পাওয়া যায় মাশরুমে। যা আমাদের শরীরের প্রতিটি অঙ্গকে সচল রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে থাকে। এছাড়া এটি খেলে ক্যালসিয়াম এবং ফসফরাসের ঘাটতিও দূর হয়। ফলে শরীরের সচলতা বৃদ্ধি পেয়ে থাকে।
৯. সেলেনিয়ামের ঘাটতি দূর করে:
সেলেনিয়াম আমাদের শরীরে জন্য অনেম উপকারী একটি উপাদান। যা আমাদের হাড়কে শক্তপোক্ত করার পাশাপাশি দাঁতের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে, চুল এবং নখের সৌন্দর্য বাড়াতে এবং শরীরকে বিষ মুক্ত রাখতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। আর এই সেলেনিয়াম সবথেকে বেশি মাত্রায় রয়েছে মাশরুমে। আর এতেই বুঝা যাছে এটি আমাদের জন্য কতটা উপকারী।
সুত্র: বোল্ডস্কাই
তথ্য সংগ্রহেঃ মাহামুদুল হাসান রুবেল