যে জমিতে আলু, ওই জমিতেই পেঁয়াজযে জমিতে আলু, ওই জমিতেই পেঁয়াজ

নিউজ ডেস্কঃ
আলু উৎপাদনে দেশের সবচেয়ে বড় জেলা মুন্সীগঞ্জে এবার আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। চার দফা বন্যার কারণে মাঠে সবজি না থাকায় আলুর ওপর চাপ পড়েছে। তাই এবারের আলু বপন মৌসুমে ব্যাপক চাষাবাদের প্রস্তুতি নিচ্ছেন কৃষকরা। এর পাশাপাশি একই জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে জেলা কৃষি অধিদপ্তর।

মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক জেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. শাহ আলম জানান, বাজারে এখন আলুর কেজি ৪৫-৫০ টাকা। এতে লাভের আশায় কৃষক এ মৌসুমে বেশি পরিমাণ জমিতে করে আলু রোপণের প্রস্তুতি নিচ্ছেন, যা আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যেতে পারে। তবে আলুর এত দামের কারণ হিসেবে তিনি বন্যাকে দায়ী করে বলেন, ‘এ বছর চার দফা বন্যা হয়েছে। এতে কৃষক ঠিকমতো বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ করতে পারেনি। বাজারে সবজির অভাব দেখা দেওয়ায় লোকজন প্রায় সব রকম তরকারিতে সবজি হিসেবে আলু ব্যবহার করছেন। এতে বাজারে আলুর চাহিদা বেড়ে গেছে। আর সামনে আলু রোপণের মৌসুম থাকায় কৃষকরাও কোল্ড স্টোরেজ থেকে বীজ আলু বের করছেন না। ফলে আলুর কিছুটা টানাটানি থাকলেও পর্যাপ্ত মজুদ রয়েছে।’

তিনি আরো জানান, জেলায় ৬৮টি কোল্ড স্টোরেজ রয়েছে। এসব কোল্ড স্টোরেজে সাড়ে পাঁচ লাখ মেট্রিক টন আলু রাখার ধারণক্ষমতা থাকলেও গত বছর আলুর উৎপাদন কম থাকায় সেখানে মজুদ করা হয়েছিল প্রায় পাঁচ লাখ মেট্রিক টন। তবে বর্তমানে এসব কোল্ড স্টোরেজে মজুদের অর্ধেক পরিমাণ আলু রয়েছে। বাজারে এখন আলুর দাম বেশি পাওয়ায় কৃষক তাঁদের মজুদকৃত আলু প্রতিদিনই বিক্রি করছেন কোল্ড স্টোরেজ থেকে। তবে এ মজুদের মধ্যে আবার কৃষকের বীজ আলুও রয়েছে। সেগুলো কৃষক এ বছর রোপণের জন্য রেখেছেন।

তিনি আরো বলেন, ‘এ বছর জেলায় আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৮ হাজার হেক্টর জমিতে। কিন্তু তা ছাড়িয়ে ৪০-৪২ হেক্টর হতে পারে। সাধারণত অক্টোবরের শেষের দিকে এই অঞ্চলের উঁচু জমিতে আর নভেম্বরের প্রথম দিকে নিচু জমিগুলোতে আলু চাষাবাদ শুরু হয়। তবে এবার এ নিয়ে কিছুটা হতাশা কাজ করছে কৃষকের মধ্যে। এখনো জমিতে হাঁটুপানি রয়েছে।’

এবার আলুর পাশাপাশি একই জমিতে পেঁয়াজ উৎপাদনের পরিকল্পনা করছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। প্রতিটি জমিতে আলুর কেল বা দুটি সারির মাঝামাঝি জায়গায় এ পেঁয়াজ লাগানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। আর এটা করা সম্ভব হলে দেশে আলুর পাশাপাশি পেঁয়াজের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে। ফলে প্রতিবছরের মতো সামনে বাজারে পেঁয়াজ নিয়ে গ্যাম্বলিংয়ের সুযোগ থাকবে না। অক্টোবরের প্রথম সপ্তায় কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিবের সঙ্গে এক অনলাইন বৈঠকে পেঁয়াজের বীজ দেওয়ার জন্য দাবি করেছে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ। বিএডিসির মাধ্যমে এ বীজ পাওয়া গেলে আলুর পাশাপাশি পেঁয়াজের উৎপাদনও বাড়ানো যাবে।

সুত্রঃ কালের কণ্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *