রংপুরের প্রকৃতিতে শোভা পাচ্ছে আশা জাগানিয়া বঙ্গবন্ধু-১০০ ধানরংপুরের প্রকৃতিতে শোভা পাচ্ছে আশা জাগানিয়া বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান

 

রংপুরের প্রকৃতিতে প্রথমবারের মতো শোভা পাচ্ছে আশা জাগানিয়া বঙ্গবন্ধু-১০০ ধান। জিংক সমৃদ্ধ এই ধান কৃষকদের মাঝে ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে দিতে পারলে দেশে ব্রি ধানের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক যুগের সূচনা হবে বলে মনে করছেন কৃষি সংশ্লিষ্টরা।

কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, জিংক সমৃদ্ধ ব্রি বঙ্গবন্ধু-১০০ নতুন জাতের এই ধানটি আধুনিক উফশী ধানের মতো। এটি বোরো মৌসুমের জাত। পূর্ণ বয়স্ক ধানগাছের উচ্চতা ১০১ সেন্টিমিটার। ১৪০ থেকে ১৪৫ দিনের মাথায় এই ধান ঘরে তোলা যাবে। এ ধানে জিংক রয়েছে ২৫৭ মিলিগ্রাম, এটি দেখতে নাজিরশাইল বা জিরা ধানের দানার মতো। বঙ্গবন্ধু ব্রি-১০০ জাত ধানের গড় ফলন হেক্টর প্রতি সাড়ে ৬ থেকে ৭ মেট্রিক টন। চালের গড় ফলন সাড়ে ৪ থেকে ৫ মেট্রিক টন। তবে অনুকূল পরিবেশ ও উপযুক্ত পরিচর্যা পেলে হেক্টর প্রতি এর ফলন বাড়তে পারে।

রংপুর কৃষি অফিসের সূত্র মতে, এই ধান এবারই রংপুরে প্রথম চাষ করা হয়েছে। জেলার ৮ উপজেলায় প্রায় ৬০ বিঘা অর্থাৎ ৮ হেক্টর জমিতে এই ধানের আবাদ হয়েছে। বর্তমানে এই ধানের বয়স ১২০ থেকে ১২৫ দিন হয়েছে। আর সপ্তাহ দুয়েক পরে এই ধান কাটা মাড়াই শুরু হবে। পরীক্ষামূলক এই ধানের ফলন খুব ভাল হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার কৃষি কর্মকর্তা।
কৃষি সম্পসারণ অধিদপ্তর খামার বাড়ি ঢাকার অতিরিক্ত উপ-পরিচালক আবু সায়েম বলেন, জিংকের অভাবে মানুষ পুষ্টিহীনতায় ভোগেন। আমাদের দেশে অধিকাংশ নারী ও শিশু জিংকের অভাবজনিত কারণে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এই ধান মানুষের দেহে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেবে। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইনস্টিটিউটের (বিআরআরআই) বিজ্ঞানীরা এই জাতের ধান উদ্ভাবন করেছেন। এর সুফল কৃষকদের কাছে যত দ্রুত পৌঁছে দেওয়া যাবে, ততই দেশের মঙ্গল হবে।

রংপুর সদরের উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা পরিমল সরকার, কৃষক আব্দুর রশিদ ও শাহ আলম জানান, ডিসেম্বর মাসে এই নতুন জাতের ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। এখন এই ধান কাটার সময় হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি ফলনের সম্ভবনা রয়েছে বলে তারা জানান।

রংপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ওবায়দুর রহমান মন্ডল বলেন, জেলায় প্রায় ৬০ বিঘা জমিতে প্লট আকারে এই ধান পরীক্ষামূলকভাবে চাষ করা হয়েছে। কৃষকের জমিতে এই ধান আবাদ করা হলেও সার্বিক দেখাশোনা করেছে কৃষি বিভাগ। আগামী দুই সপ্তাহের মধ্যে এই ধান কৃষকরা ঘরে তুলতে পারবেন। আগামীতে এই ধান দেশের খাদ্য উৎপাদনে ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

সুত্র; বিডি-প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *