নিউজ ডেস্কঃ
আসন্ন রমজান উপলক্ষে ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) মাধ্যমে ২৫ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্যতেল আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি।
রোববার (৭ মার্চ) দুপুরে সচিবালয়ে বাণিজ্যমন্ত্রীর অফিসে মন্ত্রীর সঙ্গে সফররত ভারতের বাণিজ্য ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের বাণিজ্য বিভাগের সচিব অনুপ ধাওয়ানের বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘রমজানের সময় আমাদের বাজারে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয়, সেজন্য প্রস্তুতি রয়েছে। এজন্য আমরা ২৫ হাজার মেট্রিক টন ভোজ্যতেল আমদানি করতে যাচ্ছি টিসিবির মাধ্যমে। যাতে নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে সহজে পৌঁছানো যেতে পারে। সব রকম ব্যবস্থাই আমরা নিয়েছি। তবে নিজেদের স্বয়ংসম্পূর্ণ হওয়াটাই জরুরি অনেকখানি। কিছু পণ্যের দাম নির্ধারণ করা যায় না। যেমন- ভোজ্যতেলের দাম আন্তর্জাতিক বাজারে হঠাৎ করে বেড়ে গেছে। আমাদের প্রায় ৯০ শতাংশ তেল আমদানি করতে হয়। এই বাজারটা আমাদের ওপর না। আন্তর্জাতিক বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। আমরা আমদানির দামের ওপর একটা সার্বজনীন যে দামটা মানবে সে রকম একটা দাম নির্ধারণ করি, সেটা হলো তেলে।’
তিনি আরও বলেন, ‘যেসব জিনিস আমাদের আমদানি করতে হবে সেটা আমাদের চেষ্টা করতে হবে। টিসিবি তো সারাদেশের সব জায়গায় রাখতে পারবে না। টিসিবি সাহায্য করবে নিম্ন আয়ের মানুষকে। সে জন্য আমাদের সবকিছু রয়েছে। কয়েকটা আইটেম নিয়ে আমাদের সমস্যা। যেমন- তেল, পেঁয়াজ। পেঁয়াজ আমাদের দেশে ৭৫ শতাংশ উৎপাদন হয়। বাকি ২৫ শতাংশ আমদানি করতে হয়। এটা যদি কোনো রকমে ৯০ শতাংশে যেতে পারতাম তাহলে কমে যেত। তবে আমাদের পেঁয়াজের জন্য ভারতের ওপর পুরোপুরি নির্ভর করাটা ঠিক হবে না। কারণ ওদের দেশেও পেঁয়াজ নিয়ে মাঝে মাঝে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। যার জন্য আমাদের বিকল্প বাজার থেকে ব্যবস্থা করতে হবে।’
বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, ‘মিয়ানমার থেকে রিজনেবল প্রাইসে আনা যেতে পারে। আরও কিছু জিনিস আমাদের রয়েছে যেগুলো রমজানের পণ্য। যেমন- ছোলা, খেজুর, ডাল এসব জিনিস আমদানি করতে হয়। এগুলো টিসিবির মাধ্যমে অন্যান্য বছরের তুলনায় দ্বিগুণ আমদানি করা হচ্ছে। সবকিছু বুক করা হয়েছে। আশা করছি সবকিছু এসে যাবে। রমজানের সময় আমাদের সমস্যা যেন না হয় তার জন্য প্রস্তুতি রয়েছে।’
রমজানের সময় দাম বাড়ে না, তবে রমজানের আগেই ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দেন। এটা ব্যবসায়ীদের নতুন কৌশল। এ বিষয়ে জানতে চাইলে টিপু মুনশি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি একমত। কৌশলের বাইরেও কিছু কথা আছে। যেমন প্যানিক বায়িং বলে একটা কথা রয়েছে। আমাদের বাড়ির বউরা রোজা শুরুর আগেই বলে দাম বেড়ে যাবে। তাই রোজার নিত্যপণ্য কিছু কিনে রাখো। এতে করে হয় সবাই রোজা শুরুর আগেই এক সঙ্গে বাজারে ঢুকে পড়ি। তাহলে বিক্রেতারা তো সুযোগ নেবেই। আমরা সে সুযোগ তৈরি করে দিচ্ছি।’
তিনি বলেন, ‘যদি ধরেন রোজা শুরু হওয়ার ২৪ ঘণ্টা আগ পর্যন্ত আমরা কিছু কিনব না, চুপ করে থাকব। দেখবেন কোনো উপায় থাকবে না বিক্রেতাদের দাম বাড়ানোর। সুতরাং মূল্যবৃদ্ধিতে দুই পক্ষের কিছু না কিছু সংযোগ রয়েছে। সুযোগ তো ব্যবসায়ীরা নেন। সুযোগ পেলে কোনো ব্যবসায়ী আর ছাড়েন না। আমরা চেষ্টা করবো দয়া করে ভীতি হয়ে কেনাকাটা না করি। কেনাটা স্বাভাবিক রাখেন। ক্রেতাদের দায়িত্বও কেনাটা সীমাবদ্ধের মধ্যে রাখা।
সুত্রঃ জাগো নিউজ