রাঙ্গামাটির বাণিজ্যিক কেন্দ্র বনরূপা সমতাঘাট। ভোরের আলো ফোটার আগেই হ্রদের কুয়াশা ভেদ করে দূর-দূরান্ত থেকে এখানে আসতে শুরু করে আনারস বোঝাই যন্ত্রচালিত নৌকা। ঘাটে নৌকা ভিড়তেই ব্যবসায়ীরা ঘিরে ধরে আনারসের নৌকা।
আগাম ফলন হওয়ায় চাহিদা বেশি থাকায় ফল বিক্রিতে এক প্রকার প্রতিযোগিতায় নামতে হয় ব্যবসায়ীদের। বর্তমানে সমতাঘাটের এটিই প্রতিদিনের চিত্র। গ্রীষ্মের ফল শীতে উৎপাদন শুরু হওয়ায় চাহিদা ব্যাপক। তাই পাহাড়ে বেড়েছে আগাম আনারসের চাষ।
চাষি ও কৃষি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, সাধারণত এপ্রিল থেকে জুলাই এই চার মাস আনারসের মৌসুম ধরা হলেও গত কয়েকবছর ধরে রাঙ্গামাটির বাজারে শীতেও পাওয়া যাচ্ছে আনারস। রাঙ্গামাটিতে উৎপাদিত হানিকুইন জাতের আনারসের মৌসুম ধরা হয় এপ্রিল থেকে জুলাই এই চার মাস।
তবে চাষিরা এখন শুধু এই মৌসুমের জন্য বসে থাকেন না। এক ধরনের হরমোন ব্যবহার করে এখানে শীত মৌসুমেই ব্যাপক আনারস উৎপাদন করা হচ্ছে। এতে চাষিরা পাচ্ছেন বেশি লাভ, চাহিদা বেশি থাকায় ব্যবসায়ীরাও আগাম আনারস কিনতে ব্যাপক ভিড় করছে ঘাটগুলোতে। কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, চলতি বছর দুই হাজার ১৩০ হেক্টর জমিতে আনারস উৎপাদন হয়েছে।
জীবতলী থেকে আনারস নিয়ে সমতাঘাটে আসা চাষি অমর জীবন চাকমা বলেন, এবছর আনারসের দাম ভালো পাওয়া গেছে। কিছু কিছু আনারস প্রতি পিস ১২-১৪ টাকায় বিক্রি করেছি। আবার কিছু আনারস প্রতি পিস ১৮-২০ টাকায় বিক্রি করা গেছে।
আনারস চাষি মঙ্গল চাকমা বলেন, দুর্গম পাহাড় থেকে অনেক কষ্ট করে এই সমতাঘাটে আনারস বিক্রি করতে নিয়ে আসি। ফল উৎপাদনের পর ঘাটে আনা পর্যন্ত অনেক খরচ পড়ে যায়। তবে এবার দাম কিছুটা ভালো থাকায় সেই খরচ উঠে এসেছে।
আনারস বেপারি মো. সোহেল বলেন, আগাম আনারসের চাহিদা ব্যাপক, কিন্তু যে দাম হাঁকাচ্ছে সেটা মিলছে না। আমরা এখান থেকে নিয়ে ঢাকায় বিক্রি করি, কিন্তু ঢাকার যে দাম এখানেও সেই দাম চাওয়া হচ্ছে, তাহলে আমরা কিভাবে লাভ করবো?
রাঙ্গামাটি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক তপন কুমার পাল বলেন, আগাম আনারস উৎপাদনে প্রয়োগকৃত হরমোনেরর পরিমিত ব্যবহার মানবদেহের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর নয়। তবে আগাম উৎপাদনের জন্য অতিরিক্ত মাত্রায় হরমোন ব্যবহার করা উচিত নয়।
সুত্রঃ জাগো নিউজ