বিদ্যুতের চলমান ভয়াবহ লোডশেডিংয়ে দেশের চা বাগানগুলোতে উৎপাদনে চরম বিপর্যয় নেমে এসেছে। পাশাপাশি সময়মতো চা কারখানা চালু করতে না পারায় চায়ের গুণগত মান পড়ে যাওয়ারও আশংকা রয়েছে। শিল্প এলাকায় লোডশেডিং না করার সরকারি সিদ্ধান্ত থাকলেও দেশের দ্বিতীয় রপ্তানিপন্যে চা শিল্পের বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত জানানো হয়নি বলে জানা গেছে। ফলে চা বাগান অধ্যুষিত গ্রামে গঞ্জে ঘণ্টার পর ঘণ্টা চলছে লোডশেডিং। ভয়াবহ এই লোডশেডিংয়ের ফলে দেশের ২ শতাধিক চায়ের কারখানা এক ধরনের অচল হয়ে পড়েছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা।
তথ্যানুসন্ধানে জানা যায়, বর্তমানে দেশে বানিজ্যিক চা বাগানের সংখ্যা ১৬৭ টি।এর মধ্যে সিলেট অঞ্চলে চা বাগানের সংখ্যা ১৩৭ টি। এমনকি চায়ের রাজধানীখ্যাত শুধু মৌলভীবাজার জেলায় আছে ৬৮টি চা বাগান। এসব চা বাগানের কারখানার সংখ্যা অন্তত ২ শতাধিক।
বাংলাদেশ চা অ্যাসোসিয়েশন সিলেট ব্রাঞ্চের চেয়ারম্যান এবং ফিনলে টি কোম্পানির ভাড়াউড়া চা বাগানের জেলারেল ম্যানেজার (জিএম) গোলাম মোহাম্মদ শিবলী ঢাকা টাইমসকে জানান,বর্তমানে চায়ের পিক সিজন চলছে। চায়ের মেজর উৎপাদন হয় জুলাই থেকে সেপ্টেম্বর মাসে। কিন্তু দেশের শিল্প এলাকায় লোডশেডিং না করার কথা থাকলেও ভয়াবহ লোডশেডিংয়ের কারণে আমাদের চায়ের কারখানাগুলো চালাতে পারছি না। এতে একদিকে যেমন চায়ের উৎপাদনে ধ্বস নেমেছে, ঠিক তেমনি চায়ের গুণগত মান ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। তিনি এ বিষয়ে বিদ্যুৎ ও শিল্প মন্ত্রণালয়ের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
চা বাগান এলাকায় বিদ্যুতের বর্তমান ভয়াবহ লোডশেডিং প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পল্লী বিদ্যুত সমিতি মৌলভীবাজারের মহা-ব্যবস্থাপক (জিএম) ইঞ্জিনিয়ার সাখাওয়াত হোসেন ঢাকা টাইমসকে বলেন, মৌলভীবাজার জেলার ৭ উপজেলার চা বাগান এলাকায় পল্লী বিদ্যুতের ৩টি ফিডার রয়েছে। এসব ফিডার থেকে ১৮টি সাব স্টেশনের মাধ্যমে চা বাগানে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এছাড়া আমাদের গ্রাহকও প্রায় ৪ লাখ। যেকারণে পুরো জেলার জন্য প্রতিদিন আমাদের প্রায় ৮৬-৯০ মেঘাওয়াট বিদ্যুতের প্রয়োজন । আর শুধু চা বাগান এলাকায় প্রয়োজন ২৫ মেঘাওয়াটের মতো। অথচ আমরা বর্তমানে সাকুল্যে প্রতিদিন ৪০ থেকে ৪৫ মেঘাওয়াটের মত বিদ্যুৎ পাচ্ছি। যে কারণে বাধ্য হয়ে ৫০ শতাংশ সময় পর্যন্ত লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তারপরও আমি চা বাগানের বিষয়ে আলাদা সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ডকে আজই চিঠি পাঠাবো।
সূত্রঃ ঢাকাটাইমস