শখের বশে যৌথ বাগান করে লাভবান শিক্ষকশখের বশে যৌথ বাগান করে লাভবান শিক্ষক

ঠাকুরগাঁও সদর গড়েয়া ডিগ্রি কলেজের ইসলামের ইতিহাস বিভাগের শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম। শিক্ষকতার পাশাপাশি শখের বশে বাসার পাশে পতিত জমিতে ড্রাগন, মাল্টা ও পেঁপের যৌথ বাগান করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন। এছাড়াও বাগানের পাশাপাশি মসলা জাতীয়, আদা, রসুন ও হলুদ একই বাগানে চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন। এলাকার কৃষকরা এখন বাগান করার জন্য পরামর্শ নিচ্ছেন সাদেকুল ইসলামের কাছে।

বাসার পাশে ফেলে রাখা জমিতে মাল্টা, পেঁপে ও ড্রাগন ফলের সারি সারি গাছ। ড্রাগন ফলের গাছের সাথে উর্বর মাটিতে মসলার চাহিদা পূরণে করেছেন আদা, রসুন ও হলুদ চাষ। ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার গড়েয়া বাজার এলাকায় চোখ জুড়ানো এমন ফলের বাগান দেখতে এলাকার মানুষ প্রতিদিন ভিড় করছেন।

শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম তিন বছর আগে শখের বশে পরীক্ষামূলকভাবে অল্প কিছু জমিতে ড্রাগন ফলের বাগান শুরু করেন। বাগানে আশানুরুপ ফল হওয়ায় পরবর্তী সময়ে সেখানে মাল্টা গাছের চারা রোপণ করেন। এখন তিন বছরের মাথায় তার একই বাগানে মাল্টা, পেঁপে, নারিকেল, আদা, রসুন ও হলুদ চাষ করছেন। গত ২ বছর যাবৎ মাল্টার ফলন অনেক ভালো হওয়ায় বাজারে বিক্রয় করে লাভবান হয়েছেন তিনি।
নিয়মিত পরিচর্যা সেচ ব্যবস্থা ও জৈব সার ব্যবহারের ফলে বাগানের প্রতিটি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় যেমন ফল ধরেছে, তেমনি ড্রাগন ও পেঁপে গাছেও ঝুলছে ফল। শিক্ষকতার পাশাপাশি কৃষিতে এমন অভাবনীয় অবদান রাখায় এলাকার অন্যান্য কৃষকরা তার কাছে নিচ্ছেন পরামর্শ। বাগানের এসব উৎপাদিত ফল জেলার চাহিদা পূরণে যেমন ভূমিকা রাখছে, তেমনি অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হয়েছেন তিনি।

এলাকার কৃষক রফিকুল ইসলাম বলেন, বাগানটি দেখতে অনেক সুন্দর। আর এই বাগানের মাল্টা অনেক মিষ্টি ও সুস্বাদু। তার সাথে ড্রাগন ফল, আদা, রসুন, পেপেঁ সব করেছেন তিনি। তার এই বাগান দেখে আমরাও বাগান করতে উৎসাহী। তাই সাদেকুল ভাইয়ের কাছে বাগান করার পরামর্শ নিতে এসেছি।

এলাকাবাসী জানায়, সাদেকুল ইসলামের বাগান থেকে আমরা মাল্টা ক্রয় করি। মাল্টা অনেক মিষ্টি। এছাড়াও উনার বাগানে আরো অনেক ফল রয়েছে যেমন পেপেঁ ও ড্রাগন। বিকেলে আমরা উনার বাগানে ঘুরতে আসি। বাগানে থোকায় থোকায় মাল্টা দেখতে অনেক সুন্দর। অল্প জমিতে একসাথে এত কিছু আবাদ করা সম্ভব, তা সাদেকুল ভাইয়ের বাগান না দেখলে বুঝতেই পারতাম না।

শিক্ষক সাদেকুল ইসলাম বলেন, পতিত জমি ফেলে না রেখে সহজেই ফল বাগান করে স্বাবলম্বী হওয়া সম্ভব। পড়াশোনার পাশাপাশি ছাত্ররা এসব বাগান করে লাভবান হতে পারবে। ৬০ শতক জমিতে মাল্টা, পেঁপে ও ড্রাগন ফলের যৌথ বাগান করতে প্রায় দুই লাখ টাকা খরচ হয়েছে। কিন্তু গত দু বছরে মাল্টা, ড্রাগন, আদা, পেঁপে বিক্রয় করে ইতিমধ্যে আমার কয়েক লাখ টাকা আয় হয়েছে।

ঠাকুরগাঁও জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ আবু হোসেন বলেন, জেলায় এভাবে বাগান করে অনেকে লাভবান হচ্ছে। তার সাথে এই বাগানের ফল জেলার পুষ্টির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। কৃষি অফিস থেকে সবসময় এসকল কৃষকে সহযোগিতা করা হচ্ছে এবং নিয়মিত পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।

সুত্রঃ বিডি প্রতিদিন

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *