1. mahbub@krishinews24bd.com : krishinews :

শতবর্ষেও ঘোচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা

  • আপডেট টাইম : Friday, May 21, 2021
  • 364 Views
শতবর্ষেও ঘোচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা
শতবর্ষেও ঘোচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা

নিউজ ডেস্কঃ
২০ মে ঐতিহাসিক চা শ্রমিক দিবস। ১৯২১ সালের এই দিনে ব্রিটিশদের অত্যাচার থেকে মুক্ত হতে সিলেট অঞ্চলের প্রায় ৩০ হাজার চা শ্রমিক নিজেদের জন্মস্থানে ফিরে যাওয়ার চেষ্টা চালায়। এ সময় চাঁদপুরের মেঘনাঘাটে গুলি চালিয়ে নির্বিচারে হত্যা করা হয় চা শ্রমিকদের। এর পর থেকে চা শ্রমিকরা ওই দিনে ‘চা শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করছেন। তবে বারবার দাবি জানানো হলেও এবং অনেক আন্দোলনের পরেও রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায়নি দিবসটি। ঘোচেনি চা শ্রমিকদের বঞ্চনা।

আর তাই ২০ মে ‘চা শ্রমিক দিবস’ ঘোষণা, দৈনিক মজুরি ১২০ থেকে বাড়িয়ে ৫০০ টাকা করাসহ বিভিন্ন দাবিতে কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন চা শ্রমিকরা। এ উপলক্ষে হবিগঞ্জ এবং মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলার বিভিন্ন চা বাগানে শ্রমিক সংগঠনের উদ্যোগে দিনব্যাপী আলোচনাসভা ও শোভাযাত্রাসহ নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।

চা শ্রমিক ইউনিয়নের তথ্য মতে, দেশে নিবন্ধিত চা শ্রমিক প্রায় ৯৫ হাজার, অনিয়মিত শ্রমিক প্রায় আরো ৪০ হাজার। একজন চা শ্রমিকের সাপ্তাহিক বেতন ৮৬০ টাকা। সপ্তাহে দেওয়া হয় চাল বা আটা (বাজারদর হিসেবে যে পণ্যের দাম কম)। মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ ও শ্রীমঙ্গল উপজেলায় রয়েছে ৩৪টি ছোট-বড় চা বাগান। এসব চা বাগানের শ্রমিকরা সেই আগের মতোই নির্যাতিত ও অবহেলিত রয়েছেন। প্রতিবাদী হয়ে উঠলেই শ্রমিক তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দেন বাগান মালিকরা। ১২০ টাকা দৈনিক মজুরিতে সংসার চালাতে হয় তাঁদের। সংসারের ঘানি টানতে গিয়ে পড়ালেখা খুব বেশি হয়ে ওঠে না তাঁদের ছেলে-মেয়েদের। নেই নিজস্ব নৃতাত্ত্বিক জাতিগত পরিচয়, নেই স্যানিটেশনও। কাজ করতে গিয়ে অঙ্গহানি ঘটলেও কোনো সাহায্য নেই।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় চা ছাত্র সংসদের উপদেষ্টা ছাত্রনেতা মোহন রবিদাস  বলেন, ‘এখনো চা শ্রমিকদের জীবনমানের কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও বাসস্থানের মৌলিক চাহিদা এখনো পূরণ হয়নি। অবিলম্বে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৫০০ টাকা, রেশন হিসেবে সাপ্তাহিক পাঁচ কেজি চালসহ ৭ দফা দাবি মানতে হবে।’ ২০ মে রাষ্ট্রীয়ভাবে চা শ্রমিক দিবস ঘোষণা এবং ওই দিন স্ববেতনে ছুটি বাস্তবায়নেরও দাবি জানান তিনি। কমলগঞ্জের কানিহাটি চা বাগানের চা শ্রমিক নেতা সীতারাম বিন বলেন, ‘স্বাধীনতার এত বছর পরেও চা বাগানের শ্রমিকদের ভাগ্যের কোনো পরিবর্তন আসেনি। উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি তাঁদের জীবনযাত্রায়। মৌলিক অধিকারও তাঁরা ভোগ করার সুযোগ পাচ্ছেন না।’ বাংলাদেশ কেন্দ্রীয় চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক রামভজন কৈরী বলেন, ‘আজ চা শ্রমিক দিবসের ১০০ বছর পূর্তি। ওই সময়ে শোষণ ও নির্যাতন ছিল, এখনো আছে। শুধু কৌশল পরিবর্তন করেছেন মালিকরা। আগে ধরে এনে চা শ্রমিকদের নির্যাতন করা হতো। কিন্তু এখন শারীরিক নেই—তবে মালিকদের নিপীড়ন রয়েছে। সেটা বন্ধ করতে হবে।’

এই দিবসের স্বীকৃতি পেতে হবিগঞ্জের চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি চা বাগানে সমাবেশ করবেন লস্করপুর ভ্যালির চা শ্রমিকরা। চা শ্রমিক ইউনিয়নের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও চুনারুঘাট উপজেলার চানপুর চা বাগানর শ্রমিক নিপেন পাল বলেন, ‘চা শ্রমিক দিবসটি শত বছরেও স্বীকৃতি না পাওয়ায় আমরা হতাশ। বারবার দাবি করেও শুধু আশ্বাসেই সীমাবদ্ধ থেকেছে এই দাবি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আমাদের ভোটের স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। আমরা তাঁর সুযোগ্য কন্যা মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে দিবসটির স্বীকৃতি চাই। এ ছাড়া মজুরি বৃদ্ধি, ভূমির অধিকার, চিকিৎসা, শিক্ষা ও আবাসন সুবিধাসহ অবহেলিত চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবিদাওয়া নিয়ে আমরা সমাবেশ করব।’
সুত্রঃ কালের কণ্ঠ

নিউজ টি শেয়ার করে অন্যদের জানার সুযোগ করে দিন...

এ জাতীয় আরো খবর..

© All rights reserved © 2020 krishinews24bd

Site Customized By NewsTech.Com