দেশের বাজারে দীর্ঘদিন ধরে সবজির দাম কেন ঊর্ধ্বমুখী, তা বুঝতে ‘গবেষণা’ শুরু করেছে কৃষি মন্ত্রণালয়; আর তাতে সামনে এসেছে মধ্যস্বত্বভোগীর দৌরাত্মের কথা।
কৃষি সচিব মো. সায়েদুল ইসলাম রোববার সচিবালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, “সবজির মূল্যবৃদ্ধির কারণ চিহ্নিত করতে আমরা একটা গবেষণা করছি। কৃষি কর্মকর্তারা ছাড়াও জেলা প্রশাসনকে এর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। গবেষণা শেষে সবজির মূল্যবৃদ্ধির সুনির্দিষ্ট কারণগুলো জানতে পারব। কেন সবজির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটা আমরা নির্ণয় করতে চাই।
বিশ্ববাজারের অস্থিতিশীলতার কারণে নিত্যপণ্যের দম চড়ছে বেশ কিছুদিন ধরেই। কিন্তু দেশে উৎপাদিত শাক সবজির দাম কেন দীর্ঘদিন ধরে বেশি থাকছে, তার কোনো যৌক্তিক কারণ এতদিন খুঁজে পাচ্ছিলেন না কৃষি কর্মকর্তারা। খবর বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের।
গবেষণা শুরুর পর প্রাথমিকভাবে কয়েকটি কারণ তারা ইতোমধ্যে চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপটের বিষয়টিই প্রধান বলে জানালেন কৃষি সচিব।
তিনি বলেন, “গাইবান্ধার পলাশবাড়িতে যে সবজির কেজি ১০-২০ টাকা হয়, মধ্যস্বত্বভোগীদের কারণে সেটা আমরা ঢাকায় ৬০-৭০ টাকায় কিনে খাই।”
দ্বিতীয়ত এ বছর অসময়ে দুই বার বৃষ্টিপাত হয়েছে। বিশেষ করে ৫ ডিসেম্বর ঘূর্ণিঝড় জোয়াদের প্রভাবে যে বৃষ্টিপাত হয়েছে, তা বড় ক্ষতির কারণ হয়েছে।
তাতে বাজারে উৎপাদনে ঘাটতি হয়নি, কারণ কৃষক দ্বিতীয়বার উৎপাদনে গিয়ে তা পুষিয়ে দিয়েছে। ফলে তাদের খরচ বেশি পড়েছে। কৃষকের ব্যয় বৃদ্ধি বাজারে সবজির মূল্যবৃদ্ধির আরেকটি কারণ বলে মনে করছেন কৃষি সচিব।
বাজারে এখন প্রতিটি ফুলকপি ও বাঁধাকপির দাম ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকার মধ্যে। শীতের সবজি হলেও সদ্য বিদায়ী শীত মওসুম জুড়ে ২০ টাকার নিচে নামেনি এ দুটো সবজির দাম।
একইভাবে গত বছরের তুলনায় দ্বিগুণের বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে মুলা, শালগম, শিম, লাউ, টমেটোসহ মওসুমের প্রধান সবজিগুলো।
দাম বৃদ্ধির পেছনে মধ্যস্বত্বভোগীর ভূমিকা আবিষ্কার করলেও তাদের দমন করার কোনো উদ্যোগের কথা জানাতে পারেননি সায়েদুল ইসলাম।
তিনি বলেন, “কৃষি মন্ত্রণালয় এটা নিয়ে কাজ করছে। আমরা একটা গবেষণাও করছি …। কেন সবজির দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে, এটা আমরা নির্ণয় করতে চাই। তবে আমরা এ পর্যন্ত যে তথ্যগুলো পেয়ে আসছি তা হচ্ছে সব সময় মূল্যবৃদ্ধির প্রধান কারণ থাকে মধ্যস্বত্বভোগী।”
সুত্রঃ Financial Express