সরিষা ক্ষেত থেকে চলছে মধু সংগ্রহের ধুমসরিষা ক্ষেত থেকে চলছে মধু সংগ্রহের ধুম

নিউজ ডেস্কঃ
শীতকাল এলেই সারাদেশে বিভিন্ন উপায়ে মধু সংগ্রহের ধুম পড়ে যায়। তেমনি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলার বিস্তীর্ণ সরিষা ক্ষেত থেকেও মধু সংগ্রহ করা হচ্ছে। আর ব্যবসায়ীরা সেই মধু আহরণ করে দেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করছেন।

সম্প্রতি টাঙ্গাইল উপজেলার ধুবড়িয়া ইউনিয়নের মাগুরিয়ায় গিয়ে দেখা যায়, মধু আহরণকারীরা সবাই ব্যস্ত। কেউ বাক্স থেকে মধু বের করছেন, আবার কেউ কেউ বাক্স ঠিক করে দিচ্ছেন, কেউবা ড্রামে মধু ভরছেন। এর মধ্যে ক্রেতারা এসে মধু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। প্রতি কেজি মধু ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকা কেজিতে বিক্রি করছেন তাঁরা।

সাতক্ষীরা থেকে আসা মধু ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও আমরা এখানে মধুর জন্য ১৫০টি মৌবাক্স স্থাপন করেছি। পাঁচ থেকে সাত দিন পরপর মধু আহরণ করা হয় জানিয়ে তিনি বলেন, এ কাজে ১০ থেকে ১২ জন পালা করে কাজ করেন। কামরুলের সহযোগী মৌচাষি ফরিদ আহমেদ বলেন, মৌমাছিদের সঙ্গে থাকতে থাকতে কাজটি অনেক সহজ হয়ে গেছে। এবারে সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় মধু আহরণ ভালো হবে বলে আশা করছেন তাঁরা।

শুধু ধুবড়িয়া নয়, উপজেলার মোকনা, দপ্তিয়র, পাকুটিয়া, মামুদনগরসহ বিভিন্ন ইউনিয়নের সরিষা মাঠে চলছে মধু আহরণ। উপজেলার বারটি ইউনিয়নে চলতি মৌসুমে ১০ হাজার ৭৫ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। চাষকৃত সরিষার মধ্যে রয়েছে বারি-১৪, বারি-১৫, বারি-১৭ ও টোরি-৭। যমুনা নদীর তীরবর্তী চরাঞ্চলসহ শস্যভান্ডারখ্যাত এ উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে ব্যাপক সরিষার চাষ করা হয়েছে।

এখন সরিষার ফুল থেকে চলছে মধু আহরণ। মধু আহরণের জন্য স্থানীয় লোকজনের পাশাপাশি দিনাজপুর, সাতক্ষীরা, মাগুরা, নাটোরসহ বিভিন্ন স্থান থেকে মৌখামারিরা আস্তানা গেড়েছেন এখানে। ফরিদপুরের মৌচাষি হায়দার আলী বলেন, এবার সরিষার ফলন ভালো হওয়ায় এ অঞ্চলে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে বলে আশা করছি।

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার বিভিন্ন সরিষাক্ষেতে এ বছর প্রায় ৩১৫০টি মৌবাক্স স্থাপন করা হয়েছে। চলতি মৌসুমে এখান থেকে প্রায় ৪০ হাজার কেজি মধু আহরণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা কৃষিবিদ ইমরান হোসেন শাকিল বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চলতি মৌসুমে সরিষার ফলন ভালো হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সরিষার চাষ ভালো হলে মধু আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হবে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল মতিন বিশ্বাস বলেন, লাভজনক হওয়ায় দিন দিন এ উপজেলায় সরিষার পাশাপাশি মৌচাষিদের সংখ্যা বাড়ছে। সরিষার মাঠে মৌ চাষে কৃষক ও মৌচাষি দুজনেই সমান ভাবে লাভবান হন। কারন সরিষা ফুলে মৌমাছি বসে এর পরাগায়ন ঘটায় ফলে ভাল ফলন পাওয়া যায়।

সুত্রঃ ইত্তেফাক

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *