প্রদীপ সাহা,সাপাহার (নওগাঁ) প্রতিনিধি: স¤প্রতি দেশের অন্যতম প্রধান আম উৎপাদনকারী নওগাঁ জেলার সাপাহার থেকে আম রপ্তানি হচ্ছে বিদেশে। ইংল্যান্ডে রপ্তানির উদ্দেশ্যে সোমবার (২১জুন) দ্বিতীয় চালানে নওগাঁর সাপাহার ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্ক’ ও ‘রূপ অ্যাগ্রো ফার্ম’ থেকে ১ হাজার ২৪০ কেজি আ¤্রপালি জাতের আম ঢাকার শ্যামপুরে পাঠানো হয়েছে। সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আজ রাতেই নওগাঁর আমের দ্বিতীয় এই চালান যুক্তরাজ্যে পৌঁছাবে।
এর আগে গত বৃহস্পতিবার (১৭জুন) সাপাহার উপজেলার ‘বরেন্দ্র অ্যাগ্রো পার্ক’ ও ‘রূপ অ্যাগ্রো ফার্ম’-এর মালিক তরুণ কৃষি উদ্যোক্তা সোহেল রানা আ¤্রপালির প্রথম চালানের এক মেট্রিক টন (এক হাজার কেজি) ইংল্যান্ডে পাঠান।
বাংলাদেশ ফুড অ্যান্ড ভেজিটেবল এক্সপোর্ট অ্যাসোসিয়েশনের মাধ্যমে তিনি ইংল্যান্ডে আম রপ্তানি করেন।
স¤প্রতি দেশে আম উৎপাদনকারী অন্যতম প্রধান জেলা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে উত্তরের সীমান্তবর্তী জেলা নওগাঁ। এ জেলায় উৎপাদিত আমের ৬০ শতাংশই আ¤্রপালি জাতের আম (বারি আম-৩)।
এ জন্য নওগাঁ আ¤্রপালি আমের জেলা হিসেবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেছে। এ জেলার সাপাহার, পোরশা, নিয়ামতপুর ও পতœীতলা উপজেলায় আ¤্রপালি বেশি হয়ে থাকে।
সাপাহার কৃষি কর্মকর্তা মুজিবর রহমান বলেন, ‘আম চাষের জন্য উপজেলার ১৫ চাষিকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। এই চাষিদের উৎপাদিত ও ক্ষতিকর রাসায়নিকমুক্ত আম বিদেশে পাঠানোর জন্য উপযুক্ত।’
এ ব্যাপারে সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্ল্যাহ আল মামুন বলেন, বিদেশে আম রপ্তানি এটি অত্যন্ত আনন্দের বিষয় এবং উপজেলা প্রশাসন থেকে আমরা বিভিন্ন রকমের দিক নির্দেশনা প্রদান ও পদক্ষেপ গ্রহন করেছি। সে দেশ থেকে আমরা ভাল ফিটবেগ পেয়েছি। যে আম দেশের বাজারে দুই হাজার টাকা মণে বিক্রি হচ্ছে, সেই আম রপ্তানিকারকদের কাছে চার হাজার টাকা মণ দরে বিক্রি করছেন চাষিরা, এতে করে এই এলাকার চাষীরা লাভবান হচ্ছেন।
তরুন আমচাষি সোহেল রানা বলেন, ১০৭ বিঘা জমিতে গড়ে তোলা বাগানে দেড় হাজার আম্রপালি জাতের আমগাছ আছে। এ বছর প্রায় ৫০০ আম্রপালি জাতের গাছের আমে ফ্রুট ব্যাগিং করেছেন বিদেশে আম রপ্তানির জন্য। কারণ, রোগবালাইমুক্ত আমই বিদেশে যায়। এরপরও যেসব আম বিদেশে রপ্তানি করা হবে, সেগুলো ঢাকাতে পরীক্ষা করা হয়।
ওই পরীক্ষার মাধ্যমে আমে কোনো রোগবালাই বা কীটনাশক আছে কি না, তা নিশ্চিত করা হয়। এরপর তা বিদেশে পাঠানোর অনুমতি দেওয়া হয়।
১৭ জুন এক মেট্রিক টন আম্রপালি আম কোনো ঝামেলা ছাড়াই বিদেশে পাঠাতে পেরেছেন তিনি। দ্বিতীয় চালান নিয়েও ঝামেলা হবে না বলে তিনি মনে করেন। তিনি আশা করছেন, এ বছর আরও প্রায় ২০ মেট্রিক টন আম রপ্তানি করতে পারবেন। যুক্তরাজ্য ছাড়াও ফিনল্যান্ড, ইতালি ও সুইডেনে আম পাঠানোর জন্য তিনি অর্ডার পেয়েছেন।