নিউজ ডেস্কঃ
আমের রাজধানী চাঁপাইনবাবগঞ্জে স্ট্রবেরি চাষে দারুণ সাড়া ফেলেছেন চাষিরা। এখানকার উৎপাদিত স্ট্রবেরি জেলার চাহিদা মিটিয়ে সরবরাহ করা হচ্ছে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে। বর্তমানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর এবং শিবগঞ্জ উপজেলায় স্ট্রবেরি চাষ করা হচ্ছে। তবে এর চাষ বাড়াতে উদ্যোগ নেয়ার কথা জানান কৃষি বিভাগ।
কৃষকরা বলছেন, কয়েক বছর থেকেই বাণিজ্যিকভাবে জেলার বিভিন্ন স্থানে স্ট্রবেরি চাষ শুরু হয়েছে। শীতকালীন দেশের ফল হলেও লাভবান হওয়ায় এর প্রতি ঝুঁকছেন এখানকার চাষিরা।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার শেখ হাসিনা সেতু এলাকার আসলামুল কবির জানান, তিনি প্রথমবারের মত এবার আড়াই বিঘা জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করেছেন। প্রথম চাষ করায় খরচ এবার বেড়ে গেছে। তবে আগামীতে আরও জমিতে স্ট্রবেরি চাষ করার কথা জানান তিনি।
শিবগঞ্জ উপজেলার পুকুরিয়ার স্ট্রবেরি চাষি সুজা মিঞা জাগো নিউজকে জানান, দুই বছর আগে তিনি এক বিঘা জমি লিজ নিয়ে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। তখন ৭০ হাজার টাকা খরচ করে আয় করেন প্রায় ৪ লাখ টাকা।
এরপর দেড় বিঘা জমিতে চাষ শুরু করেন। সে বছরও লাভ হওয়ায় এবার তিনি চার বিঘা জমিতে চাষ করছেন। তাতে প্রায় খরচ হয়েছে পৌনে তিন লাখ টাকা। সেখান থেকে আয় করবেন প্রায় ১২ লাখ টাকা।
দুলোভপুর গ্রামের স্ট্রবেরি চাষি আবদুল সোহেল জাগো নিউজকে জানান, তিন বছর আগে দুই বিঘা নিজের জমিতে স্ট্রবেরি চাষ শুরু করেন। তখন হতেই তিনি লাভবান হচ্ছেন। এবার আরও অন্যের দুই বিঘা জমি লিজ নিয়ে স্ট্রবেরি চাষ করছেন।
তিনি বলেন স্ট্রবেরি চাষে বেশি খরচ হয় সেচ দিতে। এখন পর্যন্ত ২৫-৩০ বার সেচ দিয়েছেন। তাতে মোট খরচ হয়েছে দুই লাখ টাকা। সে জমি হতে এবার তিনি সাড়ে চার লাখ টাকার স্ট্রবেরি বিক্রির আশা করছেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক পরিচালক মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম জাগো নিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ২১ হেক্টোর জমিতে স্ট্রবেরি চাষ হচ্ছে।
স্ট্রবেরির চাহিদা ব্যাপক থাকায় দিন দিন এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এছাড়া ফলন যেন ভালো হয় এবং কৃষরা যেন আরও উদ্ধুদ্ধ হয়-সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগ।
তিনি আরও বলেন, স্ট্রবেরি রসালো ও পুষ্টিকর ফল। স্বাদে অতুলনীয় হওয়ায় এটি সারাবিশ্বে সমাদৃত। দেশের আবহাওয়ায় আশ্বিন মাসই (মধ্য সেপ্টেম্বর থেকে মধ্য অক্টোবর) স্ট্রবেরির রোপণের উপযুক্ত সময়।
তবে নভেম্বর-ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত চারা রোপণ করা যায়। ডিসেম্বরের মাঝামাঝি সময়ে গাছে ফুল আসতে শুরু করে এবং ডিসেম্বরের শেষ ভাগ থেকে এপ্রিল পর্যন্ত ফল আহরণ করা যায়। অল্প বিনিয়োগে বেশি মুনাফা হওয়ায় এটি চাষে কৃষকদের আগ্রহ অনেক বেশি।
সত্রঃ জাগো নিউজ