নিউজ ডেস্কঃ
করোনাভাইরাস প্রতিরোধে সরকার ঘোষিত সাতদিনের কঠোর বিধিনিষেধের ফলে আমচাষে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন রংপুর অঞ্চলের আমচাষী ও ব্যবসায়ীরা।
বিধিনিষেধের প্রথম দিন থেকেই ক্রেতা শূন্য হয়ে পড়েছে আম বেচা-বিক্রির বাজার। নগরীর কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ও টিভি মোড় এর মাঝামাঝি অবস্থিত অন্যতম হাড়িভাঙ্গা আমের আড়ত। বাইরের জেলার ব্যবসায়ীরা তো দূরের কথা জেলার অভ্যন্তরের ব্যবসায়ীরাও তেমন আসছেন না আম বাজারে। ফলে এ বছর হাড়িভাঙ্গা আমের সম্ভাব্য ১৫০ কোটি টাকা বাণিজ্য নিয়ে সংশয়ে আছেন আম বেচাকেনার সঙ্গে সম্পৃক্তরা।
ইতিমধ্যে আম পরিবহনে জেলা প্রশাসনের সহযোগিতাসহ বিভিন্ন পেশার শ্রমিক ও তাদের পরিবারের মাঝে ‘প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তা’র সাথে হাড়িভাঙ্গা আম যুক্ত করেছেন রংপুর জেলা প্রশাসন। জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, চাষি ও ব্যবসায়ীদের ক্ষতি কমিয়ে আনতে আম বিপণনে সহায়তার পাশাপাশি ত্রাণ হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
নগরীর হাড়িভাঙ্গা আমের আড়ত ঘুরে দেখা গেছে, দেড় শতাধিক দোকানে থরে থরে সাজিয়ে রাখা হয়েছে হাড়িভাঙ্গা আম। ২০ জুনের পর থেকে হাড়িভাঙ্গা আমের কেনাবেচার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় হলেও ক্রেতাদের উপস্থিতি একদম নেই বললেই চলে।
জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার খোড়াগাছ উত্তর পাড়ার বাসিন্দা বাবুল মিয়া জানান, অনেক আশা নিয়ে সাড়ে ৩ লাখ টাকায় ৪০০ গাছের একটি হাড়িভাঙ্গা আমের বাগান লিজ নিয়েছিলাম। গত ২০ জুনের পর বাগান থেকে আম সংগ্রহ করা শুরু করেছেন। প্রথম পাঁচ-ছয়দিন প্রতি কেজি আম ৬০-৭০ টাকায় বিক্রি করেছেন। কিন্তু বর্তমানে ক্রেতা উপস্থিতি কমে যাওয়ায় সেই আম প্রায় ১৫-২২ টাকা দামে নেমে এসেছে।
রংপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে রংপুর জেলায় প্রায় ৩ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে আম চাষ হয়েছে। এরমধ্যে হাড়িভাঙ্গা আম হয়েছে প্রায় ১ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে। হাড়িভাঙ্গা আমের ফলন ধরা হয়েছে প্রায় ৩০ হাজার টন। প্রতি কেজি গড়ে ৫০ টাকা করে হলে উৎপাদিত আমের আনুমানিক মূল্য ১৫০ কোটি টাকা ধরা হয়েছে।
রংপুরের জেলা প্রশাসক আসিব আহসান বলেন, করোনাকালীন যাতে চাষি ও ব্যবসায়ীরা আমের ন্যায্য মূল্য পান, এজন্য জেলার উৎপাদিত আম ত্রাণ হিসেবে প্রদান করার বিষয়টি সক্রিয় বিবেচনায় আছে। তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রীর মানবিক সহায়তার সাথে শুধু ত্রাণ হিসেবে নয় যাতে পুষ্টিকর আম বিভিন্ন সরকারি ম্যানুতে অন্তর্ভুক্ত করা যায় সেজন্য জেলখানা, শিশু সদন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেছেন।
সুত্রঃ ইত্তেফাক